বিমানে ভাঙা চামচ দিয়ে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে মারতে চাইলেন যাত্রী! তারপর…

যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। ফ্রানসিসকো সেভারো টরেস নামের ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ভাঙা চামচ দিয়ে বিমানকর্মীকে আঘাতের চেষ্টা করেন এবং বিমানের দরজা খোলারও চেষ্টা করেন।

এই ঘটনার জন্য তিনি দোষ স্বীকার করেছেন। ২০২৩ সালের ৫ই মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বোস্টনগামী একটি ফ্লাইটে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত টরেস বিমানের দরজা খোলার চেষ্টা করেন এবং এরপর এক বিমানকর্মীকে ভাঙা চামচ দিয়ে আঘাত করতে যান। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত বিমানে থাকা অন্য যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তিনি এই বিমানের প্রত্যেককে মেরে ফেলবেন এবং বিমানটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিবেন।

আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। তবে, বিমানের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে তৎপরতা চালান এবং অভিযুক্তকে আটক করেন।

ঘটনার পর বোস্টন লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত টরেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি বিমানের কর্মীদের কাজে বাধা দিয়েছেন এবং একটি বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করেছেন।

ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরির মাধ্যমে সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ঘটনার সময়, বিমানের একটি দরজার লক খোলার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর বিমানকর্মীরা জরুরি নির্গমনের ব্যবস্থাটি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় দেখতে পান।

বিমানকর্মীরা ক্যাপ্টেনকে বিষয়টি জানান এবং জরুরি অবতরণের জন্য অনুরোধ করেন। এরপর টরেস তার সিট থেকে উঠে এক বিমানকর্মীর ওপর হামলা চালান।

তবে, অন্যান্য যাত্রীরা দ্রুত তাকে ধরে ফেলেন এবং বিমানের কর্মীরা তাকে নিয়ন্ত্রণে আনেন। তদন্তের সময় জানা যায়, টরেস নাকি উড়োজাহাজের নিরাপত্তা বিষয়ক ব্রিফিংয়ের সময় এক যাত্রীর কাছে দরজার হাতল কোথায় আছে জানতে চেয়েছিলেন।

এছাড়াও, ঘটনার আগে তাকে বিমানের রান্নাঘরে পায়চারি করতেও দেখা গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, দোষী সাব্যস্ত হলে টরেসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

এছাড়াও, তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তত্ত্বাবধানে রাখা হতে পারে এবং আড়াই লক্ষ মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।

আগামী ১৭ই জুলাই তার সাজা ঘোষণা করা হবে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তাদের ক্রু এবং যাত্রীদের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে কোনো বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

তারা এই ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে এবং টরেসকে ভবিষ্যতে তাদের ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *