বিড়াল ক্যাফে: বিড়ালদের আশ্রয় নাকি ব্যবসার নতুন রূপ?
বর্তমান বিশ্বে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে বিড়াল ক্যাফের ধারণা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ক্যাফেগুলোতে, গ্রাহকরা কফি ও হালকা খাবারের সাথে বিড়ালদের সান্নিধ্য উপভোগ করতে পারেন।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের কিছু প্রাণী অধিকার সংস্থা এই ধরনের ক্যাফেগুলোর বিরুদ্ধে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে, যা বাংলাদেশেও আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
যুক্তরাজ্যের পশু কল্যাণ সংস্থা, যেমন – রয়্যাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস (RSPCA) এবং ক্যাটস প্রোটেকশন, বিড়াল ক্যাফেগুলোকে ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় হল, এই ক্যাফেগুলোতে বিড়ালদের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখা সম্ভব হয় না।
সীমিত স্থান, অতিরিক্ত মানুষের আনাগোনা এবং অন্যান্য বিড়ালের সাথে সহাবস্থানের কারণে তারা মানসিক চাপে ভুগতে পারে।
অন্যদিকে, বিড়াল ক্যাফে পরিচালকরা বলছেন, তাদের ক্যাফেগুলো আশ্রয়কেন্দ্রের চেয়ে ভালো, যেখানে বিড়ালরা নতুন আশ্রয় খুঁজে পায়। তারা আরও দাবি করেন, এই ধরনের ক্যাফেগুলি বিড়ালদের দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।
নর্থ টাইনসাইডের ‘ব্যাড ক্যাট ক্যাফে’র তাসমিন হirst বলছেন, তাদের ক্যাফে মূলত একটি আশ্রয়কেন্দ্রের মতোই কাজ করে, যেখানে খাবার ও পানীয় বিক্রি করে বিড়ালদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়। তার মতে, বিড়ালদের খাঁচায় বন্দী করে রাখার চেয়ে ক্যাফেতে রাখা অনেক ভালো।
তবে, পশু অধিকার সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, কিছু বাণিজ্যিক ক্যাফেতে বিড়ালদের কল্যাণের চেয়ে ব্যবসার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে ৩২টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিড়াল ক্যাফে রয়েছে, এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে আরও অনেক ক্যাফে লাইসেন্স ছাড়াই চলছে।
বিড়ালপ্রেমীদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, বিড়াল ক্যাফেগুলো বিড়ালদের জন্য উপযুক্ত স্থান নয়। একটি বিড়ালের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত স্থান এবং স্বাধীনতা প্রয়োজন, যা ক্যাফেগুলোতে সবসময় নিশ্চিত করা যায় না।
তবে, কিছু ক্যাফে মালিক তাদের বিড়ালদের ভালো যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন। উদাহরণস্বরূপ, নরউইচের ‘ক্যাট হাউস’ ক্যাফের মালিক সারা প্রাইস-এর মতে, তিনি তার ২০টি বিড়ালের একটি সুখী জীবন নিশ্চিত করতে পেরেছেন।
তিনি নিয়মিতভাবে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিড়াল ক্যাফেগুলোর ভালো-মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা এবং উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: The Guardian