বিস্ময়কর উত্থান! বার্মিংহামের স্বপ্ন প্রিমিয়ার লিগ?

বার্মিংহাম সিটির (Birmingham City) উড়ন্ত সূচনা: প্রিমিয়ার লিগের স্বপ্নে বিভোর।

ইংলিশ ফুটবলে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে বার্মিংহাম সিটি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মাঠের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়ার পর, ক্লাবটি এবার ফিরে এসেছে পুরনো রূপে।

সম্প্রতি তারা লীগ ওয়ান থেকে চ্যাম্পিয়নশিপে (Championship) উত্তীর্ণ হয়েছে, যা তাদের সমর্থকদের জন্য আনন্দের এক উপলক্ষ্য। শুধু তাই নয়, ক্লাবটির মালিকানা পরিবর্তনের পর তাদের স্বপ্ন এখন আরও বড়—প্রিমিয়ার লিগে (Premier League) খেলা।

বার্মিংহাম সিটির এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে নতুন মালিকানা, ‘নাইটহেড ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট’। টম ওয়াগনারের (Tom Wagner) নেতৃত্বে তারা ক্লাবটিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন।

মাঠের উন্নয়নে যেমন অর্থ খরচ হয়েছে, তেমনি খেলোয়াড় কেনার ক্ষেত্রেও তারা উদারহস্ত ছিলেন। এই বিনিয়োগের ফলস্বরূপ, দল এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।

ম্যানেজার হিসেবে ক্রিস ডেভিসের (Chris Davies) কৌশল এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয়ও দলকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

বার্মিংহামের এই উত্থানে শুধু মাঠের পারফরম্যান্সই মুখ্য নয়, বরং মাঠের বাইরের কিছু ঘটনাও আলোচনায় এসেছে।

আমেরিকান ফুটবল কিংবদন্তি টম ব্র্যাডি (Tom Brady) এই ক্লাবের একজন ক্ষুদ্র অংশের মালিক। ব্র্যাডি, যিনি সাতবার সুপার বোল জিতেছেন, তাঁর এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিঃসন্দেহে বার্মিংহামের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ।

এছাড়া, ডেভিড বেকহ্যামের (David Beckham) মতো তারকার উপস্থিতি ক্লাবটিকে দিয়েছে বাড়তি জনপ্রিয়তা।

বার্মিংহামের চেয়ারম্যান টম ওয়াগনারের লক্ষ্য পরিষ্কার—চ্যাম্পিয়নশিপে তারা একটি শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য হলো প্রিমিয়ার লিগ।

ওয়াগনার বলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব উপার্জনকারী ক্লাব হতে চাই।’ খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের মধ্যেও একই ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখা যাচ্ছে।

বার্মিংহামের সাফল্যের পথে কিছু কঠিন পরীক্ষাও ছিল।

একসময় তারা লীগ ওয়ানে খেলার যোগ্যতা হারায়। এমনকি, ম্যানেজার পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আরও কিছু রেকর্ড নিজেদের করে নেয়া।

তারা উলভারহ্যাম্পটনের (Wolverhampton) ১০৩ পয়েন্টের রেকর্ড ভাঙতে চাইছে।

এছাড়াও, তারা এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতার (ডনকাস্টারের (Doncaster) ১৯৪৬-৪৭ সালের ৩৩ জয়ের রেকর্ড) দিকেও নজর রাখছে।

বার্মিংহামের এই পুনরুত্থান শুধু একটি ফুটবল ক্লাবের গল্প নয়, বরং এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা।

এটি প্রমাণ করে, সঠিক পরিকল্পনা, বিনিয়োগ এবং দৃঢ় মানসিকতা থাকলে যেকোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব। এখন সবার চোখ প্রিমিয়ার লিগে তাদের সাফল্যের দিকে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *