বার্মিংহাম: যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে আবর্জনার স্তূপ, ইঁদুরের উপদ্রব
যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বার্মিংহামে এখন এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। শহরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় জমে উঠেছে হাজার হাজার টন আবর্জনা। এর ফলে বাড়ছে ইঁদুরের উপদ্রব, যা জনস্বাস্থ্যকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ইঁদুরের আকার বিড়ালের চেয়েও বড় হয়ে গেছে।
শহরটির প্রধান সমস্যা হল, প্রায় ১৭,০০০ মেট্রিক টনের বেশি আবর্জনা এখনো পর্যন্ত পরিষ্কার করা হয়নি।
এই কারণে শহরের বিভিন্ন স্থানে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, উইল টিমস নামের একজন কীটনাশক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁর কাছে ইঁদুর মারার জন্য আসা কলের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই ধর্মঘট চলছে।
ইউনিয়ন কর্মীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের নতুন পদক্ষেপে কর্মীদের বেতন বছরে প্রায় ৮,০০০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকার বেশি) পর্যন্ত কমতে পারে।
অন্যদিকে, সিটি কাউন্সিল বলছে, তারা কর্মীদের বিকল্প কাজের সুযোগ এবং প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে।
তাদের মতে, শহরের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই পরিবর্তনগুলো জরুরি।
বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, আবর্জনার স্তূপ এবং এর থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
এর ফলে অতিরিক্ত আবর্জনা সরানোর জন্য আরও বেশি ট্রাক মোতায়েন করা হবে।
এই ঘটনার কারণে শহরের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা আবিদ জানান, “এখানে সব জায়গায় আবর্জনা আর ইঁদুর… তারা বিড়ালের চেয়েও বড়।
এটা কি ব্রিটেন? ২০২৫ সাল চলছে, আর এই অবস্থা?”
প্রসঙ্গত, বার্মিংহাম শহরটি একসময় ব্রিটেনের শিল্প বিপ্লবের কেন্দ্র ছিল।
কিন্তু বর্তমানে শহরটি আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।
২০২৩ সালে সিটি কাউন্সিল দেউলিয়া ঘোষণার মতো একটি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছিল।
এর প্রধান কারণ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি বেতন বৈষম্য সংক্রান্ত মামলা।
এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান কমে যাওয়ায় স্থানীয় সরকারের উপর চাপ বেড়েছে।
ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন।
তাই তাঁদের উপযুক্ত বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত।
এই পরিস্থিতিতে, বার্মিংহামের বাসিন্দারা তাঁদের শহরের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
শহরের এই সংকট সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন