মা-কে দূরে সরিয়ে জন্মদাতা-দের কাছে, মেয়ের সিদ্ধান্তে তোলপাড়!

একটি ২৫ বছর বয়সী তরুণী, যিনি দত্তক হিসেবে বড় হয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর জন্মদাতার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনলাইনে তাঁদের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে কথা বলার পর, তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চেয়েছেন।

তবে, তাঁর এই ব্যক্তিগত ইচ্ছাই এখন এক পারিবারিক জটিলতা তৈরি করেছে। তাঁর পালিতা মা, যিনি সবসময় তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন, এই সিদ্ধান্তে নিজেকে ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এবং একাকী অনুভব করছেন।

তরুণীর পালক মা চান যে, এই সাক্ষাৎকারে তিনি যেন উপস্থিত থাকেন। তাঁর মতে, এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত, যা সবাই মিলে ভাগ করে নেওয়া উচিত।

কিন্তু তরুণীটি ব্যক্তিগতভাবে এই মুহূর্তটি উপভোগ করতে চান, যা তাঁর কাছে আত্ম-অনুসন্ধানের একটি প্রক্রিয়া। তিনি চান, প্রথম সাক্ষাৎকারে শুধু তিনি এবং তাঁর জন্মদাতারাই থাকবেন।

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, তিনি তাঁর জীবনের এই দিকটি নিয়ে নিজের মতো করে ভাবতে চান।

এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন তরুণীটি তাঁর জন্মদাতার সঙ্গে দেখা করার কথা জানান। তিনি জানান, তাঁরা এখন পর্যন্ত ছবি বিনিময় করেছেন, ইমেইল আদান-প্রদান করেছেন, এমনকি ভিডিও কলে কথাও বলেছেন।

তাঁর জন্মদাতারা বেশ আন্তরিক এবং খোলা মনের মানুষ বলেই মনে হয়েছে তাঁর। যখন তিনি তাঁর পালক মাকে এই সাক্ষাতের কথা জানান, তখনই জটিলতা শুরু হয়।

মায়ের প্রত্যাশা ছিল, তিনি এই অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশ নেবেন।

তবে, তরুণীর এই সিদ্ধান্তে মা এতটাই আঘাত পান যে তিনি নিজেকে “গল্প থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে” বলে মনে করেন।

পালক মায়ের ধারণা, এই মুহূর্তটি তাঁদের সবার অংশ হওয়া উচিত। তরুণীটি মাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, মা তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তবে এই বিশেষ মুহূর্তটি তাঁর নিজের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এই ঘটনার পর, তরুণী অনলাইনে একটি আলোচনা সভায় (Reddit) তাঁর দ্বিধা প্রকাশ করেন এবং অন্যদের পরামর্শ চান। সেখানে অনেকেই তাঁর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন।

একজন দত্তক মা মন্তব্য করেছেন, তিনি তরুণীর অবস্থান বুঝতে পারছেন। সম্ভবত তাঁর মায়ের মনে অনেক ধরনের চিন্তা খেলা করছে এবং তরুণী এখনও তাঁর কাছে “ছোট্টটি” রয়ে গেছে।

আরেকজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, “আপনি মাকে ভালোবাসতে পারেন এবং তাঁর অনুভূতি বুঝতে পারেন, তবে আপনাকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে যে আপনি একজন স্বাধীন প্রাপ্তবয়স্ক। আপনার জীবন আপনার নিজের, তাঁর নয়। তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে আপনার জীবনের প্রধান চরিত্র তিনি নন।”

এই ঘটনা একদিকে যেমন তরুণীর ব্যক্তিগত অধিকারের প্রশ্ন তোলে, তেমনই পালক মায়ের অনুভূতির প্রতিও সম্মান জানানোর প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে। এটি একটি জটিল পরিস্থিতি, যেখানে উভয় পক্ষের অনুভূতিই গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: People

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *