বিস্ময়কর খেলা: যেখানে হাসির ফোয়ারা!

শিরোনাম: ব্রিটেনের বিচিত্র খেলা: কৃমি আকর্ষণ থেকে শুরু করে পায়ের আঙুলের কুস্তি পর্যন্ত

খেলাধুলা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে, কিছু খেলা আছে যা শুনলে হয়তো অনেকেরই ভ্রু কুঞ্চিত হবে!

ব্রিটেনের মাটিতে এমন কিছু আজব খেলাধুলার আসর বসে, যা দেখলে হাসি চাপতে পারবেন না। আসুন, এমনই কয়েকটি উদ্ভট খেলার সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক।

প্রথমেই আসা যাক ‘কৃমি আকর্ষণ’-এর কথায়। প্রতি বছর মে মাসে ডেভন প্রদেশের ব্ল্যাকটন গ্রামে মানুষের ঢল নামে।

দলবদ্ধ হয়ে তারা ৩ মিটার বাই ৩ মিটারের একটি জমিতে নেমে পরে কৃমি (কেঁচো) ধরার খেলায়। অদ্ভুত পোশাক, চিৎকার, গান – এসবের মাধ্যমে তারা চেষ্টা করে মাটির নিচ থেকে কেঁচোদের উপরে তুলে আনতে।

বেশি সংখ্যক কেঁচো আকর্ষণ করতে পারলেই মেলে পুরস্কার। ১৯৮০ সাল থেকে এই খেলার প্রচলন, যেখানে এখনো পর্যন্ত রেকর্ড গড়েছেন সোফি স্মিথ, যিনি ১৫ মিনিটে ৫৬৭টি কেঁচো ধরে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন।

এরপর গল্পটা ‘পুডিং নিক্ষেপ’-এর। গ্রেটার ম্যানচেস্টারের রামস বটম-এর একটি পাব-এ (Pub) প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে এই খেলার আয়োজন করা হয়।

খেলোয়াড়দের লক্ষ্য থাকে, একটি ২০ ফুট উঁচু মঞ্চের উপর সাজানো ইয়র্কশায়ার পুডিং-এর (রুটির মতো খাবার) স্তূপের উপর ব্ল্যাক পুডিং (এক ধরনের মাংসের খাবার) ছুড়ে মারা।

যার ছুঁড়ে মারা ব্ল্যাক পুডিং সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইয়র্কশায়ার পুডিং-কে ভূপাতিত করতে পারে, তিনিই হন বিজয়ী।

এবার আসা যাক ‘ম্যাগট রেসিং’-এর (লার্ভা দৌড়) কথায়। লিঙ্কনশায়ারে (Lincolnshire) প্রায় ৩০ বছর ধরে এই খেলার আয়োজন করা হচ্ছে।

ছয়টি লেনে রাখা ম্যাগটদের মধ্যে চলে দৌড় প্রতিযোগিতা। দর্শকরা বাজি ধরেন, কোন ম্যাগট জিতবে।

মজার ব্যাপার হলো, এই ম্যাগটদের নামও দেওয়া হয়! যেমন – সুইট ক্যারোলিন, স্মাইলিং সুসি, ব্রায়ান ইত্যাদি।

প্রতিটি রেস প্রায় আড়াই মিনিট স্থায়ী হয়, এবং বিজয়ী ম্যাগটকে নিলামে বিক্রি করা হয়।

একবার একটি ম্যাগট ৫৩০ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছিল, যা দাতব্য সংস্থায় দান করা হয়েছিল।

ব্রিটিশ খেলাধুলার তালিকায় এরপর আসে ‘শিন কিকিং’-এর (গোড়ালিতে লাথি) নাম। এটি একটি ঐতিহ্যপূর্ণ খেলা, যা ১৬১২ সাল থেকে চলে আসছে।

প্রতিযোগী একে অপরের শিনের (পায়ের সামনের অংশ) উপর লাথি মারে, এবং প্রতিপক্ষকে ভারসাম্যহীন করে মাটিতে ফেলতে হয়।

প্রতি বছর এই খেলায় ৬ থেকে ১০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। বিজয়ীকে একটি মেডেল ও কাপ দেওয়া হয়।

সবশেষে, সবচেয়ে উদ্ভট খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘টো রেসলিং’ বা পায়ের আঙুলের কুস্তি। ডার্বিশায়ারের অ্যাশবার্নে (Ashbourne) এই খেলার জন্ম।

এখানে দুটি পায়ের বুড়ো আঙুল পরস্পরের সঙ্গে গেঁথে প্রতিপক্ষকে একটি অনুভূমিক তক্তায় (board) পরাস্ত করতে হয়।

এই খেলাটি ১৯৯৮ সালে অলিম্পিক কমিটি প্রত্যাখ্যান করলেও, উদ্যোক্তারা ২০৩৩ সালের অলিম্পিকের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এগুলো সবই ব্রিটেনের কিছু অদ্ভুত খেলা, যা তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ।

খেলাগুলো যেমন মজাদার, তেমনই এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্থানীয় মানুষের আবেগ ও ভালোবাসা।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *