যুক্তরাজ্যের দুই ভিন্ন মেরুর মানুষের কথোপকথন: সামাজিক নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক
ব্রিটেনের দুই বাসিন্দা, যাদের রাজনৈতিক ও জীবনযাত্রার ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন, সম্প্রতি একটি রেস্টুরেন্টে বসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। ৭৩ বছর বয়সী ফিলিপ, যিনি সাধারণত কনজারভেটিভ দলের সমর্থক এবং অবসরপ্রাপ্ত বিপণন পরিচালক, এবং ৬৩ বছর বয়সী ডগ, যিনি লেবার পার্টির সমর্থক ও ওয়াইন ব্যবসায়ী, তাঁদের মধ্যেকার এই আলোচনা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হয়েছে।
আলোচনার শুরুতে উঠে আসে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (welfare state) নিয়ে তাঁদের ভিন্ন মতামত। ফিলিপের মতে, এই ব্যবস্থা এখন ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’। তিনি মনে করেন, সরকার মানুষকে বাড়িতে বসে থাকার জন্য এবং কাজে না যাওয়ার জন্য অর্থ দিচ্ছে।
অন্যদিকে, ডগ মনে করেন, সরকার বরং শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে পারে। তাঁর মতে, বর্তমান সরকার এবং আগের সরকারগুলি সুবিধাভোগীদের হেয় করেছে, কিন্তু সমস্যাটা আসলে নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও তাঁদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যায়। ফিলিপের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং মানুষ এর উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না। তিনি ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্যকে সময় নষ্ট বলে মনে করেন।
ডগ এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব একটি সংকটপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। ডগ মনে করেন পৃথিবীর জনসংখ্যা অনেক বেশি, কিন্তু এর সমাধানে কিভাবে এগোনো যায়, সে বিষয়ে তিনি দ্বিধাগ্রস্ত।
ফিলিপ অবশ্য বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসে শহরে কুকুর পালন প্রসঙ্গ। ফিলিপ মনে করেন, শহরের জনজীবনে কুকুরের উপদ্রব কমাতে এদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। অন্যদিকে, ডগ-এর কুকুর খুবই পছন্দের।
রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও, কথোপকথনটি বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। ডগ জানান, তিনি ফিলিপের সঙ্গে পুনরায় দেখা করতে চান। আলোচনা শেষে তারা হাসিমুখে বিদায় নেন।
এই আলোচনার মাধ্যমে, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আলোচনার গুরুত্ব ফুটে উঠেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান