৯৯ মিলিয়ন বছর আগের এক বিস্ময়কর বোলতা, যা ডাইনোসরদের যুগে ঘুরে বেড়াতো, তার সন্ধান মিলেছে! বিজ্ঞানীরা মিয়ানমারের একটি অ্যাম্বার-এর মধ্যে সংরক্ষিত এই বোলতাটি আবিষ্কার করেছেন, যা ক্রিটেসিয়াস যুগের—প্রায় ৯৯ মিলিয়ন বছর আগের।
এই বোলতাটির পেটের অংশে ছিল অদ্ভুত এক গঠন, অনেকটা ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ-এর মতো, যা সম্ভবত অন্যান্য পোকামাকড় ধরে তাদের দেহে ডিম পাড়ার কাজে ব্যবহার করত।
ডেনমার্কের প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরের কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষক লার্স ভিলহেলমসেন এবং বেইজিং-এর ক্যাপিটাল নরমাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তারা *Sirenobethylus charybdis* নামে পরিচিত এই বোলতাটির ১৬টি নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন।
তাদের মতে, বোলতাটির পেটের ওই বিশেষ গঠনটি সম্ভবত পোকামাকড়দের ফাঁদে ফেলতে কাজে লাগত। এটি এক ধরনের পরজীবী কৌশল, যেখানে বোলতা অন্য পোকাদের শরীরে ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে লার্ভা বের হয়ে সেই পোকার শরীর খেয়ে বাঁচে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অ্যাম্বারের মধ্যে পোকামাকড় এবং অন্যান্য জীবাশ্মগুলি অতীতের জীববৈচিত্র্যের এক অমূল্য চিত্র তুলে ধরে।
মিয়ানমারের কাচিন অঞ্চল থেকে পাওয়া এই অ্যাম্বারের নমুনাগুলি বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সেই সময়ের পরিবেশ এবং পোকামাকড়ের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্য জানতে পারছেন।
তবে, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেখানকার অ্যাম্বার-এর উৎস নিয়ে কিছু নৈতিক বিতর্ক রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে সচেতন এবং গবেষণার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
এই আবিষ্কারটি ক্রিটেসিয়াস যুগের পোকামাকড়দের বিচিত্র জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নিউ জার্সি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক ফিল বার্ডেন, যিনি অ্যাম্বার জীবাশ্ম নিয়ে কাজ করেন, তিনি এই আবিষ্কারকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।
তার মতে, “এই ধরনের আবিষ্কার আমাদের কল্পনার বাইরে, কারণ জীবিত পোকামাকড়ের জগতে এখনো অনেক অজানা বিষয় রয়েছে।”
এই গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অতীতের জীবজগতের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছেন, যা আমাদের বিবর্তন এবং প্রকৃতির জটিলতা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন