হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ব্লেক লাইভলি এবং জাস্টিন বালডোনির মধ্যে আইনি লড়াই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তাঁদের অভিনীত ছবি ‘ইট এন্ডস উইথ আস’ মুক্তি পাওয়ার পরেই শুরু হয়েছে এই বিতর্ক।
অভিযোগ উঠেছে, ছবিতে একসঙ্গে কাজ করার সময় জাস্টিন বালডোনি ব্লেক লাইভলিকে যৌন হেনস্থা করেছেন। ব্লেকের অভিযোগ, বালডোনি সেটে তাঁর জন্য একটি অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছিলেন।
অন্যদিকে, বালডোনির দাবি, ব্লেক ও তাঁর স্বামী রায়ান রেনল্ডস ছবিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের প্রচার করেছেন।
এই ঘটনা দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক মার্কিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কট্টরপন্থী রাজনৈতিক ভাষ্যকার ক্যান্ডিস ওউয়েন্স এবং মেগান কেলি। তাঁরা ব্লেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন এবং বালডোনির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
জানা যায়, ছবিটির শুটিং চলাকালীন ব্লেক বালডোনির বিরুদ্ধে কিছু গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন। ব্লেকের অভিযোগ ছিল, বালডোনি তাঁর ও তাঁর টিমের শারীরিক এবং মানসিক নিরাপত্তার বিষয়ে সহযোগিতা করেননি।
ব্লেক আরও অভিযোগ করেন, বালডোনি তাঁর ও তাঁর টিমের সদস্যদের ওজন ও শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করতেন। এমনকি ব্লেকের অনুমতি ছাড়াই তাঁর মেকআপ রুমে প্রবেশ করতেন এবং তাঁর প্রয়াত বাবার সঙ্গে কথা বলারও দাবি করতেন।
এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে বালডোনি প্রথমে একটি বিবৃতি দেন। পরবর্তীতে তিনি ব্লেক, তাঁর জনসংযোগ ব্যবস্থাপক এবং স্বামী রায়ান রেনল্ডসের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন।
বালডোনি অভিযোগ করেন, তাঁরা ছবির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছেন এবং তাঁর সম্মানহানি করার চেষ্টা করছেন।
এই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ডের মধ্যকার মামলার মিল খুঁজে পাচ্ছেন। সেই সময়েও অনলাইনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল এবং জনমত বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, ব্লেক-বালডোনি মামলার ক্ষেত্রেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একই ধরনের ঘটনা ঘটছে।
সামাজিক মাধ্যম বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলার সঙ্গে জড়িত অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে বালডোনির প্রতি সমর্থন বেশি দেখা যাচ্ছে। তাঁদের মতে, বালডোনির পক্ষে সমর্থন জানানো অধিকাংশ পোস্টের উৎস নির্ভরযোগ্য নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হলিউডে তারকাদের সম্মানহানির জন্য প্রায়ই জনসংযোগ এবং প্রচারণার আশ্রয় নেওয়া হয়। বর্তমানে, নিয়ন্ত্রণহীন ডিজিটাল মিডিয়ার কারণে এই ধরনের ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে।
ব্লেক লাইভলি ও জাস্টিন বালডোনির মধ্যকার এই মামলার চূড়ান্ত ফলাফল এখনো অজানা। তবে এটি তাঁদের ক্যারিয়ারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষমতা এবং জনমতের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান