যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ তুষারঝড়, ঘূর্ণিঝড় ও দাবানলের শঙ্কা!

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে তুষারঝড় ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস, বিপর্যস্ত জনজীবন।

ওয়াশিংটন, বুধবার – যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তুষারঝড়ের কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেকে গেছে, অন্যদিকে শক্তিশালী বাতাস ও দাবানলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৭ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ বাতাস সংক্রান্ত সতর্কতার আওতায় রয়েছেন।

বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৭২ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সাধারণত বছরের এই সময়ে উত্তর দিক থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস ও দক্ষিণ দিক থেকে আসা উষ্ণ বাতাসের সংমিশ্রণে শক্তিশালী নিম্নচাপ তৈরি হয়।

ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ঝড় আঘাত হেনেছে, যা এই অঞ্চলের আবহাওয়ার একটি ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে ঝড়, টর্নেডো, তীব্র ধূলিঝড় ও দাবানলের কারণে অন্তত ৪২ জন মারা গেছেন।

গাছপালা উপড়ে গেছে এবং আটটি অঙ্গরাজ্যে শত শত বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কানসাস, নেব্রাস্কা, উইসকনসিন ও আইওয়া অঙ্গরাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তুষারপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

কোথাও কোথাও প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষার পড়তে পারে।

তীব্র বাতাসের কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অনেক স্থানে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

কানসাস অঙ্গরাজ্যের পরিবহন বিভাগ তুষারপাতের কারণে দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক, আন্তঃরাজ্য ৭০, এর প্রায় ৪০০ কিলোমিটার অংশ বন্ধ করে দিয়েছে।

নেব্রাস্কায় তুষারঝড়ের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেখানেও মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, রাস্তাঘাটে জমে থাকা বরফের কারণে অনেক স্থানে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে এবং স্কুলগুলোতে ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে।

নেব্রাস্কায় প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক এবং আইওয়ার কয়েক হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

অন্যদিকে, টেক্সাস, ওকলাহোমা, আরকানসাস ও মিসৌরির মতো অঙ্গরাজ্যে তীব্র বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে দাবানলের ঝুঁকি বেড়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, গাছপালা জন্মানোর আগে শুকনো ঘাস ও লতাপাতা সহজে আগুন ধরতে পারে।

গত শুক্রবার ওকলাহোমায় দাবানল শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং চার শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়াও, ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে বজ্রঝড় ও টর্নেডোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই ঝড় ধীরে ধীরে পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে, ফলে নিউ ইংল্যান্ডের উঁচু এলাকাগুলোতে ভারী তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *