চাঁদের বুকে সফল অভিযান শেষে নীরব হয়ে গেল একটি বেসরকারি মহাকাশযান। ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস-এর তৈরি ‘ব্লু ঘোস্ট’ নামের এই যানটি দুই সপ্তাহব্যাপী নাসা-র জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
সূর্যের আলো কমে যাওয়ায় এর সৌর প্যানেলগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রবিবার রাতে এটির কার্যক্রম শেষ হয়।
ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেসন কিম এক বিবৃতিতে জানান, “অভিযানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে ‘ব্লু ঘোস্ট’-এর যাত্রা আমাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে।”
জানুয়ারি মাসে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ‘ব্লু ঘোস্ট’। এরপর ২রা মার্চ এটি চাঁদের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবতরণ করে।
নাসা’র বাণিজ্যিক চন্দ্রাভিযান প্রকল্পের অংশ হিসেবে এটিকে পাঠানো হয়েছিল। এই মিশনে ব্লু ঘোস্ট-এর সঙ্গে ছিল একটি ড্রিল, ভ্যাকুয়াম এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি বিষয়ক যন্ত্রপাতি।
সোমবার ফায়ারফ্লাই নিশ্চিত করেছে যে, এই মিশনের অন্তর্ভুক্ত ১০টি পরীক্ষাই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এই সময়কালে ব্লু ঘোস্ট চাঁদ থেকে একটি পূর্ণ সূর্যগ্রহণও পর্যবেক্ষণ করেছে, যা পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের মতো ছিল।
ফায়ারফ্লাই হলো প্রথম বেসরকারি সংস্থা, যারা চাঁদে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছে। এর আগে অন্যান্য কয়েকটি সংস্থার অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল।
এই সাফল্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত এবং জাপানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে একই সারিতে নাম লেখাল তারা।
উল্লেখ্য, জাপানের একটি কোম্পানির তৈরি একটি ল্যান্ডারও স্পেসএক্স-এর রকেটে চড়ে চাঁদের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। তবে এটি ব্লু ঘোস্টের চেয়ে দেরিতে সেখানে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, টেক্সাসের আরেকটি কোম্পানি, ইনটুইটিভ মেশিনের মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি খাদে অবতরণের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মিশনটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
ফায়ারফ্লাই তাদের পরবর্তী চন্দ্রাভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং তারা বছরে অন্তত একটি করে চন্দ্রাভিযান পরিচালনা করতে চায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস