উগান্ডার আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বিরোধী নেতা ববি ওয়াইন। তিনি জানিয়েছেন, যদি ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে তিনি ‘বেঁচে থাকেন এবং কারাগারে না যান’, তাহলে নির্বাচনে লড়বেন।
দীর্ঘদিন ধরে উগান্ডার ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ইউওয়েরি মুসেভেনির বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ নয়। অতীতে ববি ওয়াইনকে কারাবন্দী করা হয়েছে, এমনকি তার ওপর আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে। মুসেভেনির ছেলেসহ তার দলের নেতারাও ববি ওয়াইনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন।
ববি ওয়াইন ন্যাশনাল ইউনিটি প্ল্যাটফর্ম (এনইউপি) দলের নেতা। তিনি মনে করেন, দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা তাকে নির্বাচনে লড়তে উৎসাহিত করছে। উগান্ডার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের নিচে।
ববি ওয়াইন মনে করেন, তরুণদের এই সমর্থনই তার জয়ের সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে ববি ওয়াইন বরাবরই সোচ্চার।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন কূটনীতির চেয়ে গণতন্ত্রের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়। একইসঙ্গে, তিনি দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মুসেভেনি সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছেন।
ববি ওয়াইন মনে করেন, বিদেশি সাহায্য অনেক সময় শাসকগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা ও দুর্নীতির শিকার হয়। এর ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রতি বছর উগান্ডা সরকারের রাজস্বের একটি বড় অংশ—প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন উগান্ডান শিলিং (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার সমান)—দুর্নীতির কারণে നഷ്ട হয়।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের উন্নয়নের কাজে লাগানো সম্ভব। ববি ওয়াইন আরও জানান, দেশের ঋণের বোঝা অনেক বেশি এবং তা পরিশোধ করতে ৯৭ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
তবে তার বিশ্বাস, দেশের তরুণ জনশক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। ববি ওয়াইনের স্ত্রী বার্বি কাইয়াগুলানিও তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবসময় পাশে ছিলেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনেও তিনি ববি ওয়াইনের হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। ববি ওয়াইনের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছে, যা ২০২১ সালের নির্বাচনের পরে মুক্তি পায়।
ববি ওয়াইন মনে করেন, যারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেন, তাদের এই পথে নামতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমি যদি আগামী জানুয়ারির মধ্যে জেলমুক্ত থাকি, তাহলে আমি আবারও নির্বাচনে লড়ব।’
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান