বোয়িং কোম্পানির একটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুর্ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত একটি আপস মীমাংসা হয়েছে। ২০১৯ সালে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে এক কানাডীয় ব্যক্তি তার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে হারান।
এই মর্মান্তিক ঘটনার জেরে বিশ্বজুড়ে ম্যাক্স বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একটি ফেডারেল আদালতে এই মামলার শুনানির প্রস্তুতি চলছিল, যেখানে নিহত পল নজোরগের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের কথা ছিল।
কিন্তু শুনানির আগেই উভয়পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। পল নজোরগের আইনজীবী রবার্ট ক্লিফোর্ড জানিয়েছেন, তার মক্কেল ক্ষতিপূরণ হিসেবে ‘মিলিয়ন’ ডলারের বেশি দাবি করতে চেয়েছিলেন।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে কেনিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩০২-এ ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন পল নজোরগের স্ত্রী ক্যারোলিন এবং তাদের তিন সন্তান—৬ বছর বয়সী রায়ান, ৪ বছর বয়সী কেলি এবং ৯ মাস বয়সী রুবি।
বিমানটি আদ্দিস আবাবা বোলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই বিধ্বস্ত হয়।
এই ঘটনার জেরে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক আঘাত বয়ে বেড়াচ্ছেন নজোরগে। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি টরন্টোর বাড়িতে ফিরতে পারেননি, কারণ সেই স্মৃতিগুলো তাকে এখনো কষ্ট দেয়। এমনকি তিনি কোনো কাজও খুঁজে পাননি।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, বিমানের একটি সেন্সর ত্রুটিপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করার কারণে পাইলটরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে বিমানটি দ্রুতগতিতে নিচে নামতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে বিধ্বস্ত হয়।
এই ঘটনার পর বোয়িং কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিল, যার মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারতেন। বোয়িং কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার জন্য তাদের দায় স্বীকার করেছে।
এর আগে, ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় একই মডেলের আরেকটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল, যেখানে নিহত হয়েছিলেন ১৮৯ জন। উভয় ঘটনার পর, বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল।
এই বছরের শুরুতে, বোয়িং যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল, যার ফলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস