আত্নহত্যার শিকার বোয়িং কর্মীর পরিবার: বিস্ফোরক অভিযোগ!

শিরোনাম: বোয়িং কোম্পানির বিরুদ্ধে হুইসেলব্লোয়ারের আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ, ক্ষতিপূরণ মামলা

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোয়িং-এর বিরুদ্ধে তাদের এক সাবেক কর্মীর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে তার পরিবার। ওই কর্মীর নাম জন বার্নেট।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বোয়িং-এ কাজ করতেন এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ত্রুটি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। খবর অনুসারে, বার্নেট গত বছর আত্মহত্যা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বার্নেট বোয়িং কোম্পানির সাউথ ক্যারোলাইনার একটি কারখানায় ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের নির্মাণে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছিলেন। এর জেরে কোম্পানিটি তাকে হয়রানি ও ভয় দেখিয়েছিল, যা তার আত্মহত্যার কারণ হয়েছে।

বার্নেট প্রায় তিন দশক ধরে বোয়িং-এ কোয়ালিটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ওয়াশিংটনের এভারেট প্ল্যান্টে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে সাউথ ক্যারোলাইনাতে বদলি হন।

২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান, সে সময় তিনি মানসিক অবসাদ ও উদ্বেগে ভুগছিলেন বলে জানা যায়। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বোয়িং-এর নিরাপত্তা প্রক্রিয়া নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানান।

এর মধ্যে বিমানের গুরুত্বপূর্ণ তারের কাছে ধাতব টুকরা পাওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও ছিল।

পরিবারের অভিযোগ, বোয়িং বার্নেটকে নিরুৎসাহিত করতে, তার সম্মানহানি করতে এবং একপ্রকার কোণঠাসা করতে একটি ‘হয়রানি, নির্যাতন ও ভীতি প্রদর্শনের’ প্রক্রিয়া শুরু করে।

গত বছরের ৯ই মার্চ, একটি হোটেলের পার্কিংয়ে নিজের গাড়িতে বার্নেটকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শরীরে গুলির আঘাত ছিল।

এর কয়েক দিন আগে তিনি বোয়িং কোম্পানির বিরুদ্ধে করা একটি হুইসেলব্লোয়ার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

এই বিষয়ে বোয়িং এক বিবৃতিতে জন বার্নেটের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।

তবে, বার্নেটের পরিবার অভিযোগ করেছেন, বোয়িং ইচ্ছাকৃতভাবে বার্নেটকে খারাপ মূল্যায়ন ও কম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। এমনকি, তার সহকর্মীদের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, বোয়িং হয়তো সরাসরি বার্নেটকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করেনি, তবে তাদের আচরণই ছিল তার মৃত্যুর মূল কারণ। কারণ, তাদের এমন আচরণের ফলে বার্নেটের মধ্যে মানসিক চাপ, আতঙ্ক এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছিল, যা আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বোয়িং বর্তমানে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ সমালোচনার মধ্যে রয়েছে।

বিশেষ করে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তাদের তৈরি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর থেকে কোম্পানিটির নিরাপত্তা সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

যদি কোনো ব্যক্তি মানসিক অবসাদ বা আত্মহত্যার প্রবণতা অনুভব করেন, তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার সাহায্য নেওয়া উচিত। বাংলাদেশে এই ধরনের সহায়তার জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার হেল্পলাইনগুলোতে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *