আন্দিজ সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, নতুন বছর উদযাপন করে বলিভিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায়। এই উৎসবটি তাদের ঐতিহ্য আর প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
প্রতি বছর ২১শে জুন তারিখে, যখন দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকালীন অয়নকাল শুরু হয়, তখনই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বছর, তারা নতুন বছর ৫,৫৩৩ উদযাপন করেছে।
এই উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো ‘পাচা মামা’র প্রতি উৎসর্গ করা। ‘পাচা মামা’ আসলে স্থানীয় ভাষায় ‘মা ধরিত্রী’ বা ‘মাতা পৃথিবী’কে বোঝায়।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা বিশ্বাস করে, এই দিনে সূর্যের প্রথম আলো নতুন শক্তি নিয়ে আসে এবং এটি কৃষিকাজের নতুন সূচনাও বটে। তাই তারা প্রকৃতির এই অপার দানকে কৃতজ্ঞতা জানায় এবং নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করে।
এই উপলক্ষে বলিভিয়ার এল আলতো’র মতো পাহাড় ও শহরের বিভিন্ন স্থানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন একত্রিত হয়। তারা পাহাড়ের চূড়ায় বা বিশেষ স্থানগুলোতে জড়ো হয়ে সূর্যোদয় প্রত্যক্ষ করে এবং প্রকৃতির প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এই উৎসবে আগুনের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের উৎসর্গ করা হয়, যা নতুন বছরের শুভ সূচনা ও সমৃদ্ধি কামনা করার প্রতীক। অনেক স্থানে ধর্মীয় নেতারা বিশেষ মন্ত্র পাঠ করেন এবং পবিত্র তরল ছিটিয়ে দেন।
আমাদের দেশের নবান্নের উৎসবের মতো, এই উৎসবও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ককে তুলে ধরে। নতুন বছরে ভালো ফলনের প্রত্যাশা, প্রকৃতির প্রতি সম্মান জানানো এবং নতুন জীবনের সূচনা—এসব বিষয়গুলো এই উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বলিভিয়ার এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব, প্রকৃতি ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের এক চমৎকার উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস