পুরুষদের রুখতে কঙ্গোর বনমানুষদের নারী জোট!

কঙ্গোর বনাঞ্চলে বসবাসকারী স্ত্রী বনবোরা পুরুষদের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে দলবদ্ধভাবে জোট বাঁধে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

শিম্পাঞ্জির মতোই বনবোরা (Bonobos) মানুষের খুব কাছের প্রজাতি। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়টা নিয়ে কৌতূহলী ছিলেন যে, শারীরিক দিক থেকে পুরুষ বনবোরা শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও কেন বনবো সমাজের নেতৃত্ব দেয় স্ত্রী বনবোরা।

প্রায় তিন দশক ধরে কঙ্গোতে (Congo), যেখানে বন্য পরিবেশে শুধুমাত্র বনবোদের দেখা যায়, তাদের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্ত্রী বনবোদের দলবদ্ধতা তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনে সাহায্য করে। খাবারের জন্য পুরুষ বনবোদের বিতাড়িত করতে এবং নিজেদের সামাজিক অবস্থান উন্নত করতে তারা একসঙ্গে কাজ করে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্টিন সুরবেক (Martin Surbeck) এই গবেষণা সম্পর্কে বলেন, “একজন পুরুষ বনবোর পক্ষে সীমা অতিক্রম করা মোটেই নিরাপদ নয়।” গবেষণাটি ‘কমিউনিকেশনস বায়োলজি’ (Communications Biology) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকরা আরও দেখেছেন যে, দলবদ্ধ হওয়ার কারণে স্ত্রী বনবোরা পুরুষদের শারীরিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।

বন্যপ্রাণীদের মধ্যে এমন কৌশল খুব কমই দেখা যায়, যেখানে স্ত্রী সদস্যরা একত্রিত হয়ে পুরুষের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে।

সুরবেক আরও জানান, “বনবোদের এই আচরণ সম্ভবত দলবদ্ধভাবে ক্ষমতা তৈরি ও রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের পূর্বপুরুষদের কৌশলকে স্মরণ করিয়ে দেয়।” ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী লরা লুইস (Laura Lewis) এই বিষয়ে মন্তব্য করেন, “এই গবেষণা থেকে ধারণা করা যায় যে, কোটি কোটি বছর ধরে মানুষ এবং তাদের পূর্বপুরুষরা ক্ষমতা অর্জনের জন্য জোট গঠন করেছে।”

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *