দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মায়ের একটি বইয়ের ক্লাব কীভাবে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করেছিল, সেই গল্প বলছেন মার্কিন লেখিকা মার্থা হল কেলি। তাঁর মা, বেটি আর শার্লি নামের দুই বন্ধুর একটি বইয়ের ক্লাব ছিল।
সেই ক্লাবের সদস্যরা ব্ল্যাক বিউটি ও লিটল হাউস অন দ্য প্রেইরি’র মতো বই নিয়ে আলোচনা করতেন। তাঁদের এই আলোচনা মায়ের জীবনে এক নতুন দিগন্ত এনে দেয়, যখন তাঁর বাবা মারা যান এবং ভাইয়ের বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়।
সম্প্রতি, মার্থা তাঁর পঞ্চম উপন্যাস লেখার সময় কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হন। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার মার্থাস ভিনিয়ার্ড দ্বীপ।
দ্বীপটি তাঁর মায়ের পরিবারের বাসস্থান ছিল এবং তিনি জায়গাটি ভালোভাবে চিনতেন। কিন্তু যুদ্ধের কঠিন সময়ে সেখানকার মানুষের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল, তা বুঝতে পারছিলেন না।
একদিন পুরনো একটি খাতা খুঁজে বের করার সময় মার্থা তাঁর মায়ের পাঠানো একটি খাম খুঁজে পান, যা তিনি ১৯৯৯ সালে মায়ের মৃত্যুর আগে পাঠিয়েছিলেন।
খামের ভেতর ছিল বইয়ের তালিকা এবং তাঁর মেয়ের জন্য কিছু বইয়ের নাম। তাঁর মায়ের স্বপ্ন ছিল, নাতি-নাতনিরা যেন বই পড়তে ভালোবাসে।
খামটি খুলতেই তাঁর হাতে একটি সোনার হার্ট এসে পরে। তিনি অনুভব করেন, যেন তাঁর মা তাঁর পাশেই আছেন।
মায়ের সেই বই পড়ার আগ্রহ আর বন্ধুদের কথা মনে করে তিনি নতুন করে সবকিছু উপলব্ধি করতে শুরু করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যদের জন্য ছোট আকারের অনেক বই ছাপা হয়েছিল, যা তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যেতেন।
যুদ্ধ শেষে যখন তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন, তখন ‘দ্য গ্রেট গ্যাটসবি’র মতো বইগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
মার্থার মেয়ে ক্যাথরিনও এখন বই ভালোবাসে এবং তার নিজস্ব একটি বইয়ের ক্লাব আছে।
মা যেমন বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে বই উপহার দিতেন, ক্যাথরিনও তেমনটা করে।
মা তাঁদের রূপকথার গল্প শোনাতেন, যা তাঁদের ঘুম পাড়াতো।
ক্যাথরিনের বইয়ের ক্লাব আজও টিকে আছে, যেখানে সদস্যরা দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নেয় এবং বন্ধুত্বের মাধ্যমে সাহস খুঁজে পায়।
মার্থা মনে করেন, বইয়ের ক্লাব নারীদের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়, যা বর্তমানের কঠিন সময়ে খুব দরকার।
মার্থা তাঁর মেয়ের বই ক্লাবে যোগ দিতে চান, যেখানে সবাই মিলে তাঁর লেখা নতুন বই নিয়ে আলোচনা করবে।
তিনি বিশ্বাস করেন, সেখানে হাসি-কান্না, আলোচনা—সবকিছুই হবে, আর তাঁর মা তাঁদের সঙ্গেই থাকবেন।
তথ্য সূত্র: পিপল