বাংলার আকাশে বিরল শিকারি পাখি: ইংল্যান্ডের ‘ফরেস্ট অফ বোওল্যান্ড’-এ এক অন্য জগৎ।
ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমের এক নির্জন অঞ্চল, ‘ফরেস্ট অফ বোওল্যান্ড’। এখানকার দিগন্ত বিস্তৃত ভূমি, যা সাধারণত পর্যটকদের আনাগোনা থেকে দূরে থাকে, সেখানে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়।
বিরল প্রজাতির শিকারি পাখির এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল এই বোওল্যান্ড। সম্প্রতি, এখানে এক বিশেষ পাখি-পর্যটনের অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাকে আরও গভীর করে তোলে।
বোওল্যান্ডের প্রধান আকর্ষণ হল এখানকার শিকারি পাখি বা র্যাপ্টর (raptor)। এদের মধ্যে অন্যতম হল ‘হ্যান হ্যারিয়ার’ (Hen Harrier)।
অনেকটা ধূসর বর্ণের এই পাখিটিকে স্থানীয়রা ‘মুরের ভূত’ নামেও ডাকে। এদের ওড়াউড়ি মুগ্ধ হয়ে দেখার মতো। এছাড়াও এখানে আছে ‘মেরলিন’ (Merlin) এবং ‘পেরিগ্ৰিন ফ্যালকন’-এর (Peregrine Falcon) মতো দুর্লভ সব পাখি। এদের দেখা পাওয়া যেন এক বিরল অভিজ্ঞতা।
বোওল্যান্ডের প্রাকৃতিক দৃশ্যও অসাধারণ। এখানকার ভূমি ‘মূরল্যান্ড’ (Moorland) এবং ‘ব্ল্যাঙ্কেট বগ’-এর (Blanket Bog) মতো বৈশিষ্ট্যে গঠিত।
ঢেউ খেলানো ভূমি, যা অনেকটা পাহাড় এবং ঘাস অঞ্চলের মিশ্রণ, এখানকার পরিবেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এখানকার সর্বোচ্চ স্থান ‘ওয়ার্ড’স স্টোন’-এর উচ্চতা ৫৬১ মিটার।
এই অঞ্চলে পর্যটকদের আনাগোনা তুলনামূলকভাবে কম।
লেক জেলা (Lake District) এবং ইয়র্কশায়ার ডেলস-এর (Yorkshire Dales) মতো স্থানগুলোতে যেখানে বছরে কয়েক লক্ষ পর্যটকের সমাগম হয়, সেখানে বোওল্যান্ডে এই সংখ্যাটা অনেক কম।
এর কারণ সম্ভবত এখানকার দুর্গম পথ এবং সীমিত সুযোগ সুবিধা। তবে, কম মানুষের আনাগোনা প্রকৃতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
বোওল্যান্ডের একটি বড় অংশ ‘বিশেষ বৈজ্ঞানিক আগ্রহের স্থান’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কারণ, এটি বিভিন্ন পাখির আবাসস্থল এবং এখানকার পরিবেশ সংরক্ষণ করা জরুরি। বিশেষ করে, ‘হ্যান হ্যারিয়ার’ এবং ‘মেরলিন’-এর মতো পাখির জন্য এই স্থানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, এখানে একটি বিতর্কিত বিষয় হল ‘গ্রাউস শুটিং’ (Grouse Shooting)। প্রতি বছর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই শিকার চলে।
পরিবেশবাদীরা মনে করেন, এর ফলে পাখির জীবন হুমকির মুখে পড়ে। এই শিকারের কারণে অনেক সময় শিকারি পাখিদের অবৈধভাবে হত্যা করা হয়।
বোওল্যান্ডে পাখি দেখা ছাড়াও আরও অনেক কিছু উপভোগ করার আছে।
এখানে আছে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী, যেমন – ‘মেডও পিপিং’ (Meadow Pipits), ‘স্কাইলার্ক’ (Skylarks), ‘কার্লিউ’ (Curlews) ইত্যাদি।
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য বোওল্যান্ড এক অসাধারণ জায়গা।
এখানকার পাখির জগৎ, মনোরম দৃশ্য এবং শান্ত পরিবেশ মনকে শান্তি এনে দেয়। বাংলাদেশের মানুষও প্রকৃতির প্রতি আকৃষ্ট। সুন্দরবনের মতো আমাদের দেশের প্রাকৃতিক স্থানগুলো সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান