কিশোরীর জীবনে নতুন মোড়: বয়ঃসন্ধিকালে উদ্বেগমুক্ত থাকতে ৫ টিপস!

ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলার দিনগুলো পেরিয়ে কৈশোরে পা রাখাটা জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের শরীরেই আসে নানা পরিবর্তন।

উচ্চতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, এমনকি মানসিকতায়ও আসে অনেক নতুনত্ব। আর এই সময়ে ছেলেমেয়ে উভয়েরই প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা ও অভিভাবকের সচেতনতা।

সম্প্রতি, শিশুদের স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি পডকাস্টে আলোচনা করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে শিশুদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক জীবনযাত্রায় ছেলে ও মেয়ে উভয়ের মধ্যেই বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তনগুলো আগের চেয়ে দ্রুত দেখা যাচ্ছে। আগে যেখানে মেয়েদের ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার গড় বয়স ছিল ১১ বা সাড়ে ১১ বছর, সেখানে ১৯৯৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের ক্ষেত্রে এই গড় বয়স ছিল ৯.৯৬ বছর এবং কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েদের ক্ষেত্রে ৮.৮৭ বছর।

এরপর ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, মেয়েদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের শুরুটা আরও দ্রুত হচ্ছে। সাধারণভাবে, এখন মেয়েদের ক্ষেত্রে ৮ থেকে ৯ বছর বয়সের মধ্যে এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১০ বছর বয়সের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের লক্ষণ দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে বাবা-মায়ের উচিত দ্রুত কোনো স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। বয়ঃসন্ধিকালের শুরুটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে।

তাই, উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা এই সময়ে অভিভাবকদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:

  • সময় থাকতে সচেতন হোন: বয়ঃসন্ধিকালের শুরুটা এখন অনেক আগে হচ্ছে। তাই, এই বিষয়ে আগে থেকেই অবগত থাকুন।
  • পরিবর্তনগুলো বুঝুন: ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের শরীরেই পরিবর্তনগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করুন এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন।
  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব: বর্তমান যুগে ছেলেমেয়ে উভয়ের জীবনেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব অনেক বেশি। তারা কী দেখছে এবং কার সঙ্গে মিশছে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
  • হরমোনের প্রভাব: হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে মেজাজ পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, তাদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করুন এবং তাদের কথা মন দিয়ে শুনুন।
  • খোলামেলা আলোচনা করুন: ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তাদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। তাদের মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে, তা শোনা এবং বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের মধ্যে হওয়া পরিবর্তনগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলাটা খুবই জরুরি। তাদের কথা শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন এবং তাদের উদ্বেগের কারণগুলো বোঝার চেষ্টা করুন।

তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখুন, যাতে তারা কোনো দ্বিধা ছাড়াই তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে, ছেলেমেয়েদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের চ্যালেঞ্জগুলো আরও বাড়ছে। অভিভাবকদের সচেতনতা, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে, শিশুদের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাহায্য করা যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *