বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট সম্প্রতি তার জীবনের কঠিন এক অধ্যায় নিয়ে মুখ খুলেছেন। প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি কিভাবে অ্যালকোহলিকস অ্যানোনিমাস (এএ) প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজের জীবনকে নতুন করে সাজিয়েছেন, সেই বিষয়ে কথা বলেছেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা ড্যাক্স শেফার্ডের সাথে ‘আর্মচেয়ার এক্সপার্ট’ নামের একটি পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্র্যাড পিট এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
সাক্ষাৎকারে ব্র্যাড পিট জানান, ২০১৬ সালে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করার পর তিনি মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়েছিলেন। সেই কঠিন সময়ে তিনি অ্যালকোহল থেকে মুক্তি পেতে এএ প্রোগ্রামে যোগ দেন।
এই প্রোগ্রামটি তার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি বলেন, “আমি তখন সত্যিই অসহায় অবস্থায় ছিলাম। আমি সবকিছু চেষ্টা করতে রাজি ছিলাম, যে কেউ আমাকে যা-ই দিক না কেন।
সেই সময়টা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আমি যেন নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে চেয়েছিলাম। এএ প্রোগ্রাম আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে।”
এএ প্রোগ্রামের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ব্র্যাড পিট এটিকে “অসাধারণ” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমি দেখেছি, সেখানে আসা পুরুষরা তাদের জীবনের বিভিন্ন ভুল, দুর্বলতা এবং ব্যক্তিগত কষ্টের কথাগুলো খোলামেলাভাবে আলোচনা করেন।
তারা তাদের অভিজ্ঞতাগুলো এমনভাবে শেয়ার করেন যা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন এবং জীবনের প্রতি নতুন করে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সাক্ষাৎকারে ব্র্যাড পিট জানান, তিনি শুধুমাত্র এএ প্রোগ্রামের সাহায্যই নেননি, একইসাথে থেরাপিরও আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “থেরাপিতে যোগ দেওয়ার পর আমি আমার জীবনের খারাপ দিকগুলো নিয়ে কথা বলতে শুরু করি।”
নিজের ভুলগুলো স্বীকার করে তিনি সেগুলোর জন্য কিভাবে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন, সেই চেষ্টা করেছেন।
ব্র্যাড পিট মনে করেন, এই প্রোগ্রামগুলো তাকে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে। তিনি বলেন, “যখন আমি কোনো ভুল করি, তখন আমি সেটার দায়ভার নিতে প্রস্তুত থাকি।
এখন আমার লক্ষ্য হলো, এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে কিভাবে ভালো থাকা যায়।”
ড্যাক্স শেফার্ডের সাথে কথোপকথনে ব্র্যাড পিট মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “আসলে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তো কেউ এএ প্রোগ্রামে আসে না।”
ব্র্যাড পিটের এই খোলামেলা আলোচনা অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, যারা জীবনের কঠিন সময়ে সঠিক পথের সন্ধান করছেন।
তথ্যসূত্র: পিপল
