আমাজনে খনন নিয়ে মন্তব্যের জেরে সমালোচিত ব্রাজিলের গ্যাস প্রধান!

ব্রাজিলের তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাসের প্রধানের বিতর্কিত মন্তব্য: “ডিল, বেবি, ডিল!”

সম্প্রতি ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোব্রাসের প্রধান মাগদা চাম্বিয়ার্ডের একটি মন্তব্যের জেরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। তিনি বিতর্কিতভাবে “ডিল, বেবি, ডিল!” (Drill, baby, drill!) মন্তব্য করেছেন, যা আমাজন নদীর মোহনার কাছে তেল অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানায়।

এই মন্তব্যের পরই পরিবেশবিদ এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে অনুষ্ঠিত অফশোর টেকনোলজি কনফারেন্সে (Offshore Technology Conference) বক্তব্য দেওয়ার সময় মাগদা চাম্বিয়ার্ড এই মন্তব্য করেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আমাপার গভর্নর ক্লিসিও লুইসের (Clécio Luís) উদ্দেশ্যে তিনি কথা বলছেন।

তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, খনন করার অনুমতি পেলে আমরা খুব ভালো ফল পাব। তাই আমাপার মানুষকে বলতে চাই, চলো, ডিল করি, বেবি, ডিল!”

প্রসঙ্গত, “ডিল, বেবি, ডিল!” একটি বহুল পরিচিত শব্দবন্ধ, যা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর পক্ষে প্রায়ই ব্যবহার করতেন।

এই ধরনের মন্তব্য পরিবেশ সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক লক্ষ্যগুলির পরিপন্থী।

জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমানে একটি গুরুতর সমস্যা, যার মূল কারণ হলো কার্বন ডাই অক্সাইডসহ গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নিঃসরণ।

তেল অনুসন্ধান থেকে শুরু করে এর বিভিন্ন ব্যবহার পর্যন্ত, সবকিছুই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ডিল, বেবি, ডিল” এর মতো মন্তব্য শিল্পখাতের নেতাদের এবং স্বল্প-মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণকারীদের হয়তো খুশি করতে পারে, তবে এটি ইতিহাসের পাতায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যকে ব্যাহত করার জন্য চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লু্ইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, যিনি বামপন্থী হিসেবে পরিচিত, তিনি আমাজনে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে মিশ্র নীতি গ্রহণ করেছেন।

অন্যদিকে, তিনি আমাজন নদীর মোহনায় তেল অনুসন্ধানের জন্য পেট্রোব্রাসের প্রচেষ্টা সমর্থন করেন। উল্লেখ্য, আমাজন বিশ্বের বৃহত্তম ক্রান্তীয় বনভূমি, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আসন্ন কপ-৩০ সম্মেলনে আমাজনের কাছাকাছি তেল অনুসন্ধানের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

বার্ষিক জলবায়ু আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো তেল, গ্যাস এবং কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *