চিনের সঙ্গে বাণিজ্যে আমেরিকার বিচ্ছেদ: सोयाবিন চাষে ব্রাজিলের বাম্পার ফলন!

**ব্রাজিলের সয়াবিন চাষিদের জয়জয়কার, চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের ফল**

আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ব্রাজিলের সয়াবিন চাষিরা এখন বেশ খুশি। চীনের বাজারে মার্কিন সয়াবিনের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটির ব্যবসায়ীরা এখন ব্রাজিল থেকে সয়াবিন কিনতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

এর ফলে ব্রাজিলের কৃষকরা তাদের সয়াবিন উৎপাদন বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের সয়াবিন চাষি আন্দ্রে রদ্রিগেজ জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে আরও বেশি সয়াবিন কেনার জন্য প্রস্তুত। চীন সরাসরি ব্রাজিল থেকে সয়াবিন কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছে।

রদ্রিগেজের মতে, এই বাণিজ্য যুদ্ধ তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর চীনের বাজারে ব্রাজিলের সয়াবিনের অংশ ছিল ৭০ শতাংশের বেশি। এমনকি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ছিল মাত্র ২১ শতাংশ।

মার্কিন শুল্কের কারণে তাদের সয়াবিনের দামও বেড়েছে, যা ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনের চেয়ে বেশি।

ব্রাজিলের সরকার জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে চীন ৭ কোটি ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন সয়াবিন আমদানি করেছে। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারা আমদানি করেছে ১ কোটি ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন।

এই পরিস্থিতিতে, ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয় ধারণা করছে, আগামী মৌসুমে সয়াবিনের উৎপাদন প্রায় ১৭ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টনে পৌঁছাতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ৩.৬ শতাংশ বেশি।

তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের এই আগ্রহ একটি স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপ হতে পারে। তারা মনে করেন, চীন কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিকল্প সরবরাহকারীদের খুঁজছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকরা বিকল্প বাজার তৈরির চেষ্টা করছেন। তারা বলছেন, চীনের এই সিদ্ধান্তের কারণে তাদের অন্যান্য দেশে সয়াবিন বিক্রি করতে হবে এবং সয়াবিনের নতুন ব্যবহার খুঁজে বের করতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। তবে অনেক সয়াবিন চাষি মনে করেন, তারা তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টায় সফল হচ্ছেন, সরকারের কূটনৈতিক তত্পরতার কারণে নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের এই মুহূর্তে ব্রাজিল থেকে সয়াবিন কেনার কারণ হলো দাম। অন্য কোনো দেশে শুল্ক বাড়ানো হলে, তারা সাধারণত ব্রাজিল থেকে সয়াবিন কেনে।

এই পরিস্থিতিতে, অনেকে মনে করছেন, বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দামে পরিবর্তন আসতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা এবং আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।

সব মিলিয়ে, ব্রাজিলিয়ান সয়াবিন চাষিরা চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভালো করছেন। তবে এই পরিবর্তন কত দিন স্থায়ী হবে, তা বলা কঠিন।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *