চীনের গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা বিওয়াইডি-র বিরুদ্ধে ব্রাজিলে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দেশটির শ্রম বিষয়ক আইনজীবীরা এই মামলাটি করেছেন, যেখানে চীনের এই গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে শ্রমিক পাচার ও দাসত্বের মতো পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্রাজিলে একটি কারখানা তৈরির সময় শ্রমিকদের সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দায়ের হওয়া এই মামলায় বিওয়াইডি এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকা দুটি ঠিকাদার সংস্থা – জিনজিয়াং ও টেকমন্টা-কে দায়ী করা হয়েছে। আইনজীবীরা ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ কোটি ৭০ লক্ষ ব্রাজিলীয় রিয়েল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫২০ কোটি টাকার বেশি) চেয়েছেন।
এর সঙ্গে শ্রমিকদের ব্যক্তিগত ক্ষতিপূরণ এবং বিভিন্ন শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য জরিমানাও চেয়েছেন তারা। প্রতিটি লঙ্ঘনের জন্য প্রায় ৫,০০০ রিয়েল জরিমানা করার আর্জি জানানো হয়েছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের সংখ্যার ভিত্তিতে বাড়বে।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিওয়াইডি জানিয়েছে, তারা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ব্রাজিল ও আন্তর্জাতিক শ্রম আইনকে সম্মান করে। তারা আরও জানায়, শ্রমিক আইনজীবীদের সঙ্গে তারা সহযোগিতা করছে এবং মামলার শুনানিতে এর জবাব দেবে।
ডিসেম্বরে আইনজীবীরা জানান, বিওয়াইডি-র ঠিকাদারদের হয়ে কাজ করা ২২০ জন চীনা শ্রমিককে বাহিয়া রাজ্যে “দাসত্বের মতো পরিস্থিতিতে” কাজ করতে দেখা গেছে।
আইনজীবীদের মতে, তারা আন্তর্জাতিক মানব পাচারের শিকারও হয়েছেন।
শ্রম বিষয়ক উপ-আইনজীবী ফ্যাবিও লেইল এক সাক্ষাৎকারে জানান, ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে এই তিনটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল, কিন্তু কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। কেন আলোচনা সফল হয়নি, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি।
ফ্যাবিও লেইল আরও জানান, শ্রমিকদের অবৈধভাবে ব্রাজিলে আনা হয়েছিল এবং তাদের ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, তা পূরণ করা হয়নি।
বর্তমানে চীনা শ্রমিকেরা সবাই চীন ফিরে গেছেন। তবে, মামলার রায় অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি ব্রাজিল-এর কোম্পানিগুলোর উপরই বর্তাবে। ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রমাণ তাদের জমা দিতে হবে।
তিনি আরও যোগ করেন, এখনো আপোস করার সুযোগ রয়েছে, তবে এখন তা আদালতের মাধ্যমে করতে হবে। “আমাদের মামলাটি খুবই শক্তিশালী, তদন্তের সময় আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণ সংগ্রহ করেছি,” জানান তিনি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন