স্তন কমানোর অস্ত্রোপচারের পর তরুণীর জীবন পরিবর্তন, ভাইরাল ভিডিও!

অনুমান করুন, আপনি যদি নিজের শরীরের গঠন নিয়ে অসন্তুষ্ট হন এবং এর কারণে দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন, তাহলে কেমন লাগবে? একজন অস্ট্রেলীয় তরুণী, অ্যামি, তেমনই এক পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন।

অতিরিক্ত স্তনের কারণে শারীরিক ও মানসিক কষ্টের শিকার হওয়া অ্যামি’র জীবন পরিবর্তন হয় ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারির মাধ্যমে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই অভিজ্ঞতার ভিডিও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অ্যামি, ২৪ বছর বয়সী, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে বসবাস করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি স্তনের অতিরিক্ত আকারে হতাশ ছিলেন।

১৪ বছর বয়স থেকে তার স্তন দ্রুত বাড়তে শুরু করে এবং একসময় এটি তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে পিঠে ব্যথাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকত, যা তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল।

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া বা চাকরির ইন্টারভিউয়ের মতো বিষয়গুলোও তার কাছে অস্বস্তিকর হয়ে উঠত। সবসময় নিজের শরীর নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন তিনি।

শারীরিক কষ্টের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়েছিল অ্যামির। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম এবং বডি ডিসমরফিয়ার কারণে তিনি নিজের শরীরকে আর স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছিলেন না।

এমনকি, একটি শিশুর জন্ম দিতে আইভিএফ পদ্ধতির সাহায্য নেওয়ার পরে তার শারীরিক সমস্যা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে, পোশাক পরতে বা গোসল করতেও তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হতো।

নিজের এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে, অ্যামি ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারির কথা ভাবেন। প্রথমে তিনি ব্যক্তিগত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন, যেখানে প্রায় ২০,০০০ অস্ট্রেলীয় ডলার খরচ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ হতে পারে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার বেশি। পরে তিনি সরকারি স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।

সরকারি স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে অস্ত্রোপচারের জন্য আবেদন করার পরও তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। কয়েকবার তার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর, অবশেষে তিনি অস্ত্রোপচারের অনুমতি পান।

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যামির স্তনের আকার এইচ কাপ থেকে ডি কাপে আনা হয়। একইসঙ্গে, স্তনের আকার ঠিক রাখার জন্য একটি নিপল লিফটিংও করা হয়।

অস্ত্রোপচারের পর প্রথম কয়েক দিন কিছুটা কষ্টের মধ্যে কাটলেও, ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

অস্ত্রোপচারের পর এখন তিনি শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে অনেক ভালো আছেন। অস্ত্রোপচারের পর নতুন ব্রা কেনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আগে যেখানে একটি ব্রা কিনতে ১০০ ডলারের বেশি খরচ হতো, সেখানে এখন তিনি মাত্র ৫ ডলারে ব্রা কিনতে পারছেন।

পোশাক কেনাকাটার ক্ষেত্রেও এখন তিনি অনেক স্বাধীনতা অনুভব করেন।

অ্যামি তার এই অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। তার এই গল্প অন্যদেরও একইভাবে উৎসাহিত করছে।

ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারির মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো সম্ভব, অ্যামির জীবন তারই প্রমাণ। যারা শরীরের গঠন নিয়ে হতাশায় ভুগছেন, তাদের জন্য অ্যামির এই গল্প নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন জোগায়।

তিনি এখন নিজের জীবনকে নতুন করে উপভোগ করছেন এবং অন্যদেরও এই বিষয়ে সচেতন করতে চান।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *