ব্রায়ান উইলসন: সঙ্গীতের জগতে শোকের ছায়া!

শিরোনাম: ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত বিচ বয়েজ-এর কিংবদন্তি শিল্পী ব্রায়ান উইলসন

সঙ্গীতের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, বিচ বয়েজ-এর প্রধান শিল্পী ব্রায়ান উইলসন, ৮২ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

সুরের জাদুকর হিসেবে পরিচিত এই শিল্পী, ১৯৬০-এর দশকে পপ সঙ্গীতে নতুন ধারার জন্ম দিয়েছিলেন, যা আজও সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। তাঁর গানগুলো শুধু একটি প্রজন্মের প্রতিনিধি ছিল না, বরং সঙ্গীতের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল।

ক্যালিফোর্নিয়ার ইনগলুডে জন্ম নেওয়া ব্রায়ান, ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন।

বাবা-মায়ের উৎসাহে তিনি পিয়ানো ও অ্যাকর্ডিয়ান বাজানো শেখেন। পরবর্তীতে, ভাই ডেনিস ও কার্ল এবং বন্ধু ও আত্মীয়দের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন ‘দ্য বিচ বয়েজ’।

তাঁদের গানগুলোতে সমুদ্রের ঢেউ, সার্ফিং এবং গাড়ির উন্মাদনা— সবকিছুই যেন জীবন্ত হয়ে উঠত। ‘সুরফিন’ ইউএসএ’, ‘সুরফার গার্ল’, ‘আই গেট অ্যারাউন্ড’-এর মতো গানগুলো দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিশ্বজুড়ে পরিচিতি এনে দেয়।

ব্রায়ানের সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য এবং সুরের ভিন্নতা।

গানের সুরে তিনি নতুনত্ব এনেছিলেন, যা শ্রোতাদের মন জয় করে নেয়। ‘পেট সাউন্ডস’ অ্যালবামটি ছিল তাঁর সৃজনশীলতার চূড়ান্ত উদাহরণ, যা সঙ্গীতের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে আজও বিবেচিত হয়।

এই অ্যালবামে ‘গড অনলি নোজ’-এর মতো গানগুলো তৈরি করে তিনি প্রমাণ করেছিলেন, সঙ্গীতের জগতে তিনি কতটা প্রভাবশালী।

তবে, খ্যাতির শিখরে আরোহণের এই সময়ে ব্রায়ান ব্যক্তিগত জীবনে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছেন এবং একসময় সঙ্গীত জগৎ থেকে দূরে ছিলেন।

পরবর্তীকালে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন এবং কনসার্টে তাঁর গান পরিবেশন করে পুরনো খ্যাতি ফিরে পান।

ব্রায়ানের দ্বিতীয় স্ত্রী মেলিন্ডা লেডবেটারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল গভীর। তিনিই ছিলেন ব্রায়ানের জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।

তাঁদের ভালোবাসার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘লাভ অ্যান্ড মার্সি’ সিনেমাটি, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে।

সঙ্গীতের প্রতি ব্রায়ানের ভালোবাসা এবং তাঁর সৃষ্টিশীলতা তাঁকে অমর করে রাখবে।

তাঁর গানগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের হৃদয়ে বাজতে থাকবে। ব্রায়ান উইলসন, একজন শিল্পী হিসেবে, সঙ্গীতের জগতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *