যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের এক নববধূ তার প্রয়াত মায়ের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এক ব্যতিক্রমী পথ বেছে নিয়েছেন। মা ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর, ঐতিহ্যবাহী শোকানুষ্ঠান আয়োজনের পরিবর্তে তিনি মায়ের বিয়ের পোশাকটি নতুন করে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন।
আনা নামের ওই নববধূর মা ২০০৮ সালে মারা যান, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। মায়ের মৃত্যুর পর, তিনি সবসময় চেয়েছিলেন মায়ের স্মৃতিকে এমনভাবে ধরে রাখতে যা বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকে।
মায়ের মৃত্যুর পর, ২০১৩ সালে তিনি বাবার ঘর পরিষ্কার করার সময় মায়ের ১৯৮০ সালের পুরোনো বিয়ের পোশাকটি খুঁজে পান। পোশাকটি হাতে পাওয়ার পরই তিনি সেটি কিভাবে ব্যবহার করবেন, সেই বিষয়ে একটি ধারণা তৈরি করেন।
আনা জানান, তিনি মায়ের বিয়ের পোশাকের হাতার ডিজাইনটি খুব পছন্দ করতেন। তাই তিনি তার বন্ধুদের জন্য আয়োজিত ‘ব্রাইডাল শাওয়ার’-এ (বিয়ের আগের একটি অনুষ্ঠান) সেটি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন।
যখন সকলে মায়ের পোশাকের হাতাগুলো দেখতে পান, তখন সেখানে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এরপর বিয়ের অনুষ্ঠানেও মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতে অন্যরকম পরিকল্পনা করেন তিনি।
বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য আনা একটি অভিনব উপহারের ব্যবস্থা করেন। তিনি মায়ের পোশাকের লেস কেটে, পুনর্ব্যবহৃত ব্রাস ঘণ্টাগুলোতে বেঁধে দেন।
বিয়ের পর যখন কনে এবং বর তাদের আসন ত্যাগ করছিলেন, তখন উপস্থিত সকলে এই ঘণ্টা বাজিয়ে তাদের প্রতি সম্মান জানান।
বিয়ের অনুষ্ঠানের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন উপস্থিত সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ফটোগ্রাফার রেবেকা জানান, এই দৃশ্যটি ছিল আনন্দ এবং ভালোবাসায় পরিপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত অতিথিদের হাতে কিছু তুলে দিলে, সবাই সেটি ব্যবহার করে না। কিন্তু এখানে, প্রত্যেক অতিথি তাদের হাতে থাকা ঘণ্টা বাজাচ্ছিলেন, যা ছিল খুবই আবেগপূর্ণ একটি মুহূর্ত।
বিয়ের পর, আনা তার বন্ধুদের মধ্যে এই ঘণ্টাগুলো বিতরণ করেন। বন্ধুদের অনেকে তাদের বাড়িতে ঘণ্টাগুলো সাজিয়ে ছবি তুলেছেন এবং তাদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন।
আনা বলেন, মায়ের স্মৃতিস্বরূপ এই উপহারগুলো বিতরণের মাধ্যমে তিনি যেন মায়ের ভালোবাসাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন।
আনার ভাষায়, তার মা ছিলেন একজন “কোমল হৃদয়ের, আত্মবিশ্বাসী” নারী। তিনি সব সময় অন্যদের সাহায্য করতে চাইতেন এবং ভালোবাসতেন।
মায়ের এই দিকটি তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।
তথ্য সূত্র: পিপল