বর ও কনের সাজানো সংসার জীবনের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত, এমন সময় বন্ধুদের মাঝে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনায় সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বৈকি! সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বিয়ের আয়োজন চলাকালীন এক কনে তার বান্ধবীর প্রতি এমন আচরণ করেছেন যা অনেকের কাছেই হতবাক করার মতো।
ঘটনার সূত্রপাত হয় এক বছর আগে, যখন এমিলি নামের এক তরুণীর বাগদান সম্পন্ন হয়। এরপর থেকেই তিনি তার স্বপ্নের বিয়ের দিনটির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন এমিলিরই এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী একই সময়ে বাগদান সারেন। এই ঘটনায় এমিলি এতটাই ক্ষিপ্ত হন যে তিনি বান্ধবীকে তার বিয়ের দল থেকে বাদ দেন!
ঘটনার বিস্তারিত জানতে জানা যায়, এমিলির বান্ধবী, যিনি ‘ওপি’ নামে পরিচিত, বিয়ের অনুষ্ঠানে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে কারণে নিজের বাগদানের ঘোষণা দিতেও দেরি করেছিলেন। এমনকি এমিলিকে তার বাগদানের খবর জানানোর আগে, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কোনো পোস্ট করেননি, যাতে এমিলির আনন্দের কোনো কমতি না হয়।
কিন্তু এরপরও এমিলির আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং তিনি ওপি’র প্রতি শীতল মনোভাব প্রকাশ করতে শুরু করেন।
বিয়ের প্রস্তুতিতে ওপি সবসময় এমিলিকে সাহায্য করেছেন। বিয়ের পোশাকের জন্য কেনাকাটা থেকে শুরু করে, অনুষ্ঠানস্থলের সজ্জা— সবকিছুতেই তিনি ছিলেন এমিলির পাশে।
কিন্তু বিয়ের মাত্র তিন মাস আগে, এমিলি ওপিকে জানান যে তিনি চান না ওপি তার বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্রাইডাল পার্টিতে থাকুক। এমিলি সরাসরি ওপিকে বলেছিলেন, “আমার মনে হচ্ছে, এটা আমার বছর, আর তোমার বাগদান যেন সবকিছুকে ম্লান করে দিচ্ছে।
তুমি সবসময়ই যেন অজান্তে সবকিছু নিজের দিকে টেনে নাও।”
বিষয়টি শুনে ওপি হতবাক হয়ে যান। তিনি এমিলির কাছে জানতে চান, তিনি এমনটা কবে করেছেন।
উত্তরে এমিলি জানান, একই সময়ে বাগদান হওয়াটাই যেন সবকিছুকে এলোমেলো করে দিয়েছে। ওপি বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তার হবু স্বামী কখন বিয়ের প্রস্তাব দেবেন, সেটি তো তার নিয়ন্ত্রনে ছিল না।
এমনকি তিনি এমিলির আনন্দের কথা চিন্তা করে নিজের বাগদানের ঘোষণা দিতেও দেরি করেছেন। কিন্তু এমিলি তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।
এই ঘটনার পর, ওপির পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টিতে জড়িয়ে পড়েন। এমিলির পরিবারের সঙ্গে ওপির পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে, বিষয়টি দ্রুত সবার মাঝে ছড়িয়ে পরে।
ওপির এক আত্মীয়া, যিনি এমিলিরও বন্ধু, তিনি পুরো পরিবারকে জানান যে, ওপি নাকি এমিলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার চেষ্টা করছেন এবং তার বাগদান ‘ঝোঁকের বশে’ হয়েছে।
এমনকি তিনি এও বলেন যে, ওপি তার বাগদানকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে এমিলিকে ছোট করার চেষ্টা করছেন!
বর্তমানে ওপি একা, হতাশ এবং নিজেকে এই গল্পের খলনায়িকা হিসেবে দেখছেন। তার হবু স্বামীও এমিলির উপর খুব রেগে গিয়েছেন এবং ওপিকে ওই বিয়েতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সব মিলিয়ে, বিয়ের মতো একটি আনন্দের অনুষ্ঠানে বন্ধুত্বের এমন অপ্রত্যাশিত মোড় নিঃসন্দেহে হৃদয়বিদারক।
তথ্য সূত্র: পিপল