ব্রিটিশ কমেডিয়ান ও অভিনেত্রী ব্রিজেট ক্রিস্টির জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি নতুন প্রতিবেদন।
ব্রিজেট ক্রিস্টির নামটা এখন বিশ্বজুড়ে পরিচিত। স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার পর তিনি অভিনেত্রী এবং লেখিকা হিসেবেও নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তাঁর কমেডি-ড্রামা সিরিজ ‘দ্য চেঞ্জ’-এর জন্য তিনি বিশেষভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন। এই সিরিজে মধ্যবয়সী নারীদের জীবন এবং মেনোপজ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ক্রিস্টির জন্ম ১৯৭১ সালে, যুক্তরাজ্যের গ্লুচেস্টারশায়ারের ফরেস্ট অফ ডিন-এ। নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তাঁর বাবা-মা দুজনেই ছিলেন আইরিশ। শুরুতে তাঁর পরিবার লন্ডনে বসবাস করত, পরে বাবার কাজের সূত্রে তাঁরা ফরেস্ট অফ ডিনে চলে আসেন। অল্প বয়সেই স্কুল ত্যাগ করা ক্রিস্টির জীবনে কমেডি ছিল সবসময়ই। তাঁর কৌতুকবোধ, সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে তাঁর স্পষ্ট মতামত—এগুলোই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।
‘দ্য চেঞ্জ’ সিরিজে ক্রিস্টি অভিনয় করেছেন এবং এর চিত্রনাট্যও তিনিই লিখেছেন। এটি তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সিরিজটি মূলত মেনোপজের শিকার নারীদের জীবন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মধ্যবয়সে নারীদের জীবনে আসা শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো কীভাবে তাঁদের জীবনকে প্রভাবিত করে, সেই গল্পই তুলে ধরা হয়েছে এখানে। সমাজের চোখে নারীদের ভূমিকা, তাঁদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি—এসব বিষয়ও তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
শুধু অভিনয় বা লেখা নয়, ক্রিস্টি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও খোলামেলা আলোচনা করেন। তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ এবং একা থাকার সিদ্ধান্ত—এসব বিষয় নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণা ভেঙে তিনি প্রমাণ করেছেন, নারীরা তাঁদের জীবন সম্পর্কে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাঁর মতে, জীবনের এই পর্যায়ে এসে তিনি নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন।
কাজের বাইরে, ক্রিস্টির ব্যক্তিগত জীবনও বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। তিনি বর্তমানে একা জীবন যাপন করছেন এবং ভালোবাসার নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানোর তেমন আগ্রহ নেই তাঁর। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার হৃদয় পরিপূর্ণ। আমি ভালোবাসার জন্য প্রস্তুত, তবে সেটিকে আমি খুঁজছি না।”
কমেডি জগতে নারীদের পথচলা সব সময় সহজ ছিল না। ক্রিস্টি নিজেও এই বাধাগুলো অতিক্রম করে এসেছেন। বিশেষ করে, শুরুতে নারীবাদী বিষয় নিয়ে কাজ করায় অনেকে তাঁকে সমালোচনা করেছিলেন। তবে তিনি সবসময় নিজের বিশ্বাসের প্রতি অবিচল ছিলেন এবং হাস্যরসের মাধ্যমে সমাজের কঠিন বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
নিজের কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্রিজেট ক্রিস্টির এই স্পষ্টবাদীতা ও সাহসিকতা তাঁকে আরও বেশি মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। তাঁর কাজ নারীদের নতুন করে বাঁচতে, স্বপ্ন দেখতে এবং সমাজের প্রচলিত ধারণাগুলো ভাঙতে উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান