বরং নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ২০৩২ সালের ব্রিসবেন অলিম্পিকের একটি প্রস্তাবিত ভেন্যু। অলিম্পিকের রোয়িং ইভেন্ট আয়োজনের জন্য কুইন্সল্যান্ডের রকহ্যাম্পটনের ফিটজরয় নদীকে বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তের পর থেকেই জলজ্যান্ত কুমিরের আবাসস্থল নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ফিটজরয় নদীতে কুমিরের উপদ্রব এতটাই বেশি যে, এখানে আন্তর্জাতিক মানের রোয়িং প্রতিযোগিতা আয়োজন করা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্ব রোয়িং ফেডারেশন এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির অনুমোদন পাওয়া এখনো বাকি।
রয়িং অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী সারা কুক জানিয়েছেন, ফিটজরয় নদীর বর্তমান অবস্থা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে না।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতার জন্য নদীর যে গভীরতা এবং স্রোতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, ফিটজরয় সেই মানদণ্ড পূরণ করে না।
তিনি আরও জানান, যেহেতু এখনো পর্যন্ত বিশ্ব রোয়িং এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সঙ্গে এই ভেন্যু নিয়ে আলোচনা হয়নি, তাই কারিগরি দিক থেকে এটি উপযুক্ত কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, রকহ্যাম্পটনের স্থানীয় রোয়িং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট সারা ব্ল্যাক জানিয়েছেন, ফিটজরয় নদীতে কুমির একটি স্বাভাবিক বিষয়।
তারা কুমিরের আনাগোনা সম্পর্কে অবগত এবং সেভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
তিনি আরও যোগ করেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কিছু বাড়াবাড়ি হয়েছে, যেখানে এটিকে ‘কুমিরে ভরা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে, কুমির নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই ব্রিসবেন অলিম্পিকের প্রধান অ্যান্ড্রু লিভারিস ‘ইতিবাচক মানসিকতা’ নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, “সমুদ্রে হাঙর থাকে, তাই বলে তো আমরা সার্ফিং বন্ধ করি না।”
স্থানীয় কুমির বিশেষজ্ঞ জন লিভার জানিয়েছেন, ফিটজরয় নদীটি নোনা জলের কুমিরের বাসস্থানের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত।
তাঁর মতে, অলিম্পিকের জন্য এই স্থান নির্বাচন একটি দারুণ সিদ্ধান্ত।
তিনি ফিটজরয়কে বর্ণনা করেছেন বহু পুরনো গাছ, দ্বীপ এবং জলাভূমি দিয়ে গঠিত একটি ‘অসাধারণ দৃশ্য’ হিসেবে।
জন লিভার আরও জানান, ফিটজরয় নদীতে কুমির অপসারণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর জন্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে ফাঁদ পেতে কুমির ধরার মতো পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।
যদিও তিনি এও উল্লেখ করেছেন, এখানে বসবাসকারী কুমিরগুলো সাধারণত মানুষের কোনো ক্ষতি করে না।
রকহ্যাম্পটনের মানুষের সঙ্গে কুমিরের সহাবস্থানের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
এমনকি, শহরের পুরনো প্রতীকগুলোতেও কুমিরের ছবি দেখা যায়।
তবে, অলিম্পিক ভেন্যু হিসেবে ফিটজরয় নদীর নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে।
এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার সমাধান কিভাবে করে এবং ২০৩২ সালের অলিম্পিকের জন্য একটি নিরাপদ ও উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে পারে কিনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান