ধ্বংসের আশঙ্কায়! ব্রিটেনের বাজারে বাড়ছে ক্রসবো কেনার হিড়িক, বাড়ছে চাহিদা

পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে বিপর্যয়-পূর্ব প্রস্তুতির প্রবণতা: ব্রিটেনের অভিজ্ঞতা।

বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং বিভিন্ন সম্ভাব্য দুর্যোগের আশঙ্কায়, ব্রিটেনে বাড়ছে ‘প্রিপিং’ বা আসন্ন বিপদ মোকাবিলার প্রস্তুতি। কোভিড-১৯ মহামারী, ইউক্রেন যুদ্ধ, এমনকি সাইবার হামলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো এই প্রস্তুতির মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।

ব্রিটেনের এই প্রস্তুতি-প্রবণতা এখন আর কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে এটি ছড়িয়ে পড়ছে।

প্রস্তুতির স্বরূপ :

প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জরুরি খাদ্য, জল, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং আত্মরক্ষামূলক সামগ্রী মজুত করার দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। যদিও ব্রিটেনে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা বেশ কঠিন, তাই এখানে প্রস্তুতি মূলত খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস মজুদের ওপর বেশি নির্ভরশীল।

ব্রিটেনের এই প্রস্তুতি-প্রবণতা উত্তর আমেরিকার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। সেখানে অফ-গ্রিড জীবনযাপনের সুযোগ থাকলেও, ব্রিটেনের সীমিত জায়গায় সেটি কঠিন।

এই পরিবর্তনের কারণ :

ব্রিটিশ সমাজে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় জরুরি সামগ্রীর অভাব দেখা দেয়, যা মানুষকে আরো সচেতন করে তোলে।

এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গ্যাস মাস্ক এবং পারমাণবিক সুরক্ষা সামগ্রীর চাহিদা বাড়ে। সাইবার আক্রমণের ক্রমবর্ধমান হুমকির কারণেও অনেকে উদ্বিগ্ন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত :

বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন এমন একজন হলেন নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বুশরা শেহজাদ। তাঁর মতে, প্রস্তুতি গ্রহণকারীরা বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখেন এবং তাঁরা তাঁদের চারপাশের ঘটনা সম্পর্কে খুবই সচেতন।

প্রস্তুতির সামগ্রী :

প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে রয়েছে শুকনো খাবার, উইন্ড-আপ রেডিও, গ্যাস মাস্ক, পটাশিয়াম ট্যাবলেট এবং ক্রসবো। ব্রিটেনের একজন দোকানদার জাস্টিন জোনস জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থার জন্য শুকনো খাবারের বিক্রি অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট :

বাংলাদেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি নিয়মিত ঘটনা। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে জনগণের জীবন ও জীবিকা প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এই পরিস্থিতিতে, ব্রিটেনের প্রস্তুতি-প্রবণতা বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে। ব্যক্তিগত এবং সামাজিক পর্যায়ে প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের প্রভাব কমানো সম্ভব।

সরকারের ভূমিকা :

ব্রিটিশ সরকারও এই প্রস্তুতি-প্রবণতাকে উৎসাহিত করছে। তারা একটি প্রচার অভিযান শুরু করেছে, যার মাধ্যমে জনগণকে জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

উপসংহার :

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অনিশ্চয়তা বাড়ছে, যা মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে উৎসাহিত করছে। ব্রিটেনের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, প্রস্তুতি শুধু ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং একটি সচেতন ও দায়িত্বশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *