ব্রিটিশ সরকারের নতুন চমক! অভিবাসন আইন কঠোর, তোলপাড়!

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আইন আরও কঠোর হচ্ছে, নাগরিকদের উদ্বেগের কারণ।

যুক্তরাজ্যের সরকার অভিবাসন আইন আরও কঠোর করতে চলেছে। সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই ঘোষণা করেন। এর মূল কারণ হলো, অভিবাসন নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি এবং কট্টর-ডানপন্থী দলগুলোর সমর্থন কমানো।

এইসব দলগুলো অভিবাসন বিরোধী অবস্থান নেয়ায় জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, এখন থেকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে একজন অভিবাসীকে ১০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, যেখানে আগে সময়সীমা ছিল পাঁচ বছর। এছাড়াও, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতার মানও বাড়ানো হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাজ্যে বৈধ অভিবাসীর সংখ্যা কমবে।

প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে অভিবাসন কমবে, এটিই আমাদের প্রতিশ্রুতি।” তিনি আগের কনজারভেটিভ সরকারের অভিবাসন নীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “তারা দেশের যে ক্ষতি করেছে, তা অপূরণীয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় নির্বাচনে নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন দল ‘রিফর্ম ইউকে’র উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পরেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এই দলটি মূলত অভিবাসন বিরোধী এবং তাদের জনপ্রিয়তা বর্তমানে বাড়ছে।

নতুন নিয়মের ফলে কিছু পেশাজীবীর জন্য সুবিধা রাখা হয়েছে। ডাক্তার, নার্স ও প্রকৌশলীদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা দ্রুত নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে, এই পদক্ষেপগুলো নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

কেউ কেউ বলছেন, এটি যথেষ্ট কঠোর নয়, আবার কারো কারো মতে, এটি খুব বেশি কড়াকড়ি আরোপ করছে।

গত বছর, প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষ বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, যা দেশটির জন্য একটি বড় সংখ্যা। এর ফলে আবাসন এবং সরকারি পরিষেবাগুলোর ওপর চাপ বেড়েছে।

তবে, স্বাস্থ্যখাতে কর্মী সংকট মেটাতে এটি সহায়ক হয়েছে।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিবাসীদের জন্য ইংরেজি ভাষার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া, বিদেশি শিক্ষার্থীরা তাদের ডিগ্রি শেষ করার পর ১৮ মাস পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে থাকতে পারবে, যা আগে দুই বছর ছিল।

সামাজিক পরিষেবা খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, ডানপন্থী দলগুলোর উত্থানকে প্রতিহত করা। কারণ, এই দলগুলো অভিবাসন বিরোধী কঠোর বার্তা দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *