ফের জেগে উঠছে ব্রিটেনের সমুদ্র শহরগুলো: ৭টি সেরা গন্তব্য!

ব্রিটিশ সমুদ্র সৈকত শহরগুলোতে ফিরছে পর্যটকদের আনাগোনা, ঘুরে আসুন সেরা সাতটি গন্তব্য থেকে।

একসময় ব্রিটেনের সমুদ্র তীরবর্তী শহরগুলো যেন তাদের জৌলুস হারাতে বসেছিল। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সস্তা বিদেশি ভ্রমণের কারণে পর্যটকদের আনাগোনা কমে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৩-এর মাঝামাঝি সময়ে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।

জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ, বিমানের প্রতি মানুষের অনীহা এবং প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার আগ্রহ – এই সব কিছু মিলেমিশে সমুদ্র শহরগুলোতে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ছে। মহামারীর কারণে ‘staycation’-এর ধারণা জনপ্রিয় হওয়ায় এই প্রবণতা আরও বেড়েছে।

পর্যটকদের জন্য নতুন করে সেজে উঠছে এইসব শহর। পুরনো দোকানগুলোর স্থানে তৈরি হচ্ছে গ্যালারি, আধুনিক শিল্পকর্মের প্রদর্শনী কেন্দ্র, চমৎকার রেস্তোরাঁ, এবং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কেন্দ্র।

এই শহরগুলোর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান হলো: মারগেট, পেনজেন্স, বারমাউথ, স্কারবোরো, ওয়েমাউথ, হুইটলি বে এবং নর্থ বেরউইক।

আসুন, এদের কয়েকটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

মারগেট :

কেন্ট-এর এই শহরটি তার নান্দনিকতা এবং বিনোদনের জন্য সুপরিচিত। এখানে রয়েছে টার্নার কন্টেম্পোরারি-র মতো আর্ট গ্যালারি, যা শহরের সংস্কৃতিকে নতুন রূপ দিয়েছে।

তাছাড়া, এখানকার পুরনো ‘ড্রিমল্যান্ড’ বিনোদন পার্কটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যেখানে বিভিন্ন কনসার্ট ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মারগেটের রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে ‘এ্যাঞ্জেলেস’ এবং থাকার জন্য ‘নো ৪২ বাই গেস্টহাউস’ বেশ জনপ্রিয়।

পেনজেন্স :

কর্নেরালের এই শহরটি ধীরে ধীরে তার আকর্ষণ পুনরুদ্ধার করছে। এখানকার ‘গোলওন’ এবং ‘মন্টল’ উৎসবগুলি পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়।

পেনলীর হাউস গ্যালারি ও মিউজিয়ামের কর্মশালা এবং সেমি-ট্রপিক্যাল বাগানগুলিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এখানে ভাল খাবারের জন্য বারবিকান বিস্ট্রো এবং থাকার জন্য আর্টিস্ট রেসিডেন্স কর্নওয়াল-এর মতো জায়গাগুলো বেছে নিতে পারেন।

বারমাউথ :

উত্তর ওয়েলসের এই শহরটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানকার সমুদ্র সৈকত, পাহাড় এবং মনোরম দৃশ্য পর্যটকদের মন জয় করে।

বারমাউথের ‘বারমাউথ ভায়াডাক্ট’ এখানকার একটি অন্যতম আকর্ষণ।

এখানে আপনি ‘লবস্টার পট’-এর মতো রেস্তোরাঁয় স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।

থাকার জন্য ‘আবার হাউস’-এর মতো সুন্দর জায়গা রয়েছে।

স্কারবোরো :

ইংল্যান্ডের প্রথম সমুদ্র শহর হিসেবে পরিচিত নর্থ ইয়র্কশায়ারের স্কারবোরো-তে পর্যটকদের জন্য অনেক কিছুই রয়েছে।

এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণ ও অনুষ্ঠান।

পুরনো ‘এসপ্ল্যানেড’ এবং ‘ইতালিয়ান গার্ডেন’ এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।

এখানকার ‘বেলিরাব’ -এর মত রেস্তোরাঁ এবং ‘বাইক অ্যান্ড বুট’-এর মত হোটেলে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

ওয়েমাউথ :

২০১২ সালের অলিম্পিক গেমসের পর ডরসেটের এই শহরটি নতুন করে পরিচিতি লাভ করেছে।

এখানকার সুন্দর সমুদ্র সৈকত, পুরনো প্রাসাদ এবং বাগানগুলো পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।

এখানে ‘স্যান্ডসফুট ক্যাসেল’ এবং ‘নোট ফোর্ট’-এর মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে।

এখানকার ‘ক্যাচ অ্যাট দ্য ওল্ড ফিশ মার্কেট’-এর খাবার এবং ‘দ্য গ্রেশাম’-এর মত হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা অসাধারণ।

হুইটলি বে :

উত্তর টাইনসাইডের এই শহরটি তার আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত এবং কেনাকাটার জন্য সুপরিচিত।

এখানে ‘স্প্যানিশ সিটি’র মতো সুন্দর স্থান রয়েছে।

তাছাড়া, এখানকার ‘হর্টিকালচার কোস্টাল’-এর মত রেস্তোরাঁয় স্থানীয় খাবার উপভোগ করা যেতে পারে।

থাকার জন্য ‘ইয়র্ক হাউস হোটেল’ একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

নর্থ বেরউইক :

এই শহরটি তার সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং উন্নত জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত।

এখানকার ‘ফ্রিন্জ বাই দ্য সি’ উৎসব এবং স্কটিশ সিবার্ড সেন্টার পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।

নর্থ বেরউইকের ‘লবস্টার শ্যাক’ এবং ‘ড্রিফট’-এর মত রেস্তোরাঁয় ভাল খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।

থাকার জন্য ‘মেরিন নর্থ বেরউইক’-এর মত সুন্দর হোটেলগুলো বেছে নিতে পারেন।

ব্রিটিশ সমুদ্র শহরগুলোতে ভ্রমণের এই সুযোগ নিঃসন্দেহে আপনার ভালো লাগবে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *