ব্রিটিশ বনাম আমেরিকান: সৌজন্যতার লড়াই, কোন দিকে পাল্লা ভারী?

People

Manners Across the Pond: What Brits and Americans Get Right (and Wrong!), According to an Etiquette Expert

পশ্চিমের দেশগুলোতে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে, মানুষের সামাজিক আচরণ এবং শিষ্টাচারের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যগুলো তাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের গভীরতা থেকে আসে।

সম্প্রতি, একজন খ্যাতিমান শিষ্টাচার বিশেষজ্ঞ, উইলিয়াম হ্যানসন, এই দুই দেশের মানুষের আদব-কায়দা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, এই দুটি সংস্কৃতি একে অপরের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারে।

উইলিয়াম হ্যানসন একজন সুপরিচিত সামাজিক শিষ্টাচার প্রশিক্ষক এবং লেখক। তিনি রাজপরিবারের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর খ্যাতি রয়েছে।

হ্যানসন ছোটবেলা থেকেই এই বিষয়টির প্রতি আকৃষ্ট হন। তাঁর ঠাকুরমা তাঁকে একটি শিষ্টাচার বিষয়ক বই উপহার দিয়েছিলেন, যা তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

হ্যানসনের মতে, ব্রিটিশ এবং আমেরিকানদের মধ্যে শিষ্টাচারের কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভোজ টেবিলে খাবার পরিবেশনের ধরনের কথা বলা যেতে পারে।

ব্রিটিশরা সাধারণত আনুষ্ঠানিক পরিবেশে সোজা ধারযুক্ত টেবিল ব্যবহার করে, যেখানে প্লেটের দু’পাশে নয়টি করে কাটলারি ( ছুরি, কাঁটা, চামচ) সাজানো থাকে। অন্যদিকে, আমেরিকানরা গোল টেবিল ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে, যা সামাজিকতা বাড়াতে সহায়ক।

এই কারণে তাদের প্লেট এবং কাটলারি সাজানোর ধরনেও ভিন্নতা দেখা যায়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কথোপকথনের ধরন। হ্যানসনের মতে, আমেরিকানরা সাধারণত খুব দ্রুত এবং খোলাখুলিভাবে নিজেদের ভাবনা প্রকাশ করে। তাঁরা সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করে।

অন্যদিকে, ব্রিটিশরা একটু বেশি সংরক্ষিত এবং তাঁদের কথা বলার ধরনে অনেক সময় জটিলতা দেখা যায়। তাই, ব্রিটিশদের তুলনায় আমেরিকানদের আতিথেয়তা অনেক বেশি আন্তরিক হতে দেখা যায়।

তবে ব্রিটিশদের মধ্যে অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং তাদের ঐতিহ্য রক্ষার একটা প্রবণতা দেখা যায়।

বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠানেও এই দুই দেশের রীতিনীতি ভিন্ন। ব্রিটেনে সাধারণত কনে সবার আগে বিয়ের মণ্ডপে প্রবেশ করেন, তাঁর পিছনে থাকেন ব্রাইডমেইডরা।

আর আমেরিকায়, এই রীতিটি উল্টো। কনে সবার শেষে প্রবেশ করেন, তাঁর সঙ্গে থাকেন বাবা অথবা পরিবারের অন্য কোনো সদস্য।

উইলিয়াম হ্যানসন আরও উল্লেখ করেছেন, ‘স্কোন’ শব্দটির উচ্চারণ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

ব্রিটিশরা সাধারণত ‘গন’ -এর মতো করে উচ্চারণ করে, যেখানে আমেরিকানরা ‘কোন’ -এর মতো উচ্চারণ করে।

তবে স্কটিশ উচ্চারণ অনুযায়ী, এটি ‘জুন’-এর মতো শোনায়।

পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রেও কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যেমন, রেস্টুরেন্টে টুপি পরে যাওয়াটা ব্রিটিশ সমাজে খুব একটা প্রচলিত নয়, কারণ এটি কিছুটা অপ্রত্যাশিত।

উইলিয়াম হ্যানসনের মতে, এই দুটি সংস্কৃতির মানুষেরা একে অপরের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। আমেরিকানদের আন্তরিকতা এবং সরাসরি কথা বলার ধরন ব্রিটিশদের গ্রহণ করা উচিত, আবার ব্রিটিশদের ঐতিহ্য এবং নিয়ম-কানুন রক্ষার বিষয়টি আমেরিকানদের অনুসরণ করা যেতে পারে।

মোটকথা, বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্কৃতি এবং সামাজিক রীতিনীতি ভিন্ন হতে পারে। তাই, অন্যদের সংস্কৃতিকে সম্মান করা এবং তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করা উচিত।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *