ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার কর্মী নিয়োগের ফাঁদ! ভিডিও সাক্ষাৎকারের পরামর্শ

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক করা হচ্ছে, যাতে তারা তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে। উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা ভুয়া পরিচয়ে কাজ নিয়ে কিম জং উনের সরকারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে।

সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সরকার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের দিকে বেশি নজর দিয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভুয়া কর্মী নিয়োগের কৌশল কঠিন হয়ে পড়েছে।

সাধারণত, ভুয়া কর্মীরা দূর থেকে কাজ করে এবং তাদের বেতন সরাসরি উত্তর কোরিয়ায় পাঠানো হয়। এর ফলে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এমনকি, অনেক সময় চাকরিচ্যুত হওয়ার পরে তারা কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করার হুমকিও দেয়।

গুগলের থ্রেট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের প্রধান বিশ্লেষক জন হুল্টকুইস্টের মতে, উত্তর কোরিয়া এখন ইউরোপকে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যকে তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সাধারণত যুক্তরাজ্যের স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সাহায্য নেয়, যারা ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করা এবং ভুয়া ঠিকানা ব্যবহারের মতো কাজে সহায়তা করে।

এমনকি, কর্মীদের ল্যাপটপ সরবরাহ করার কাজটিও তারা করে থাকে।

এই ভুয়া কর্মীরা সাধারণত আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার এবং টেলিগ্রামের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে চাকরি খুঁজে নেয়।

এই প্ল্যাটফর্মগুলো ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করাকে তাদের নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।

সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা, সিকিউরওয়ার্কসের উত্তর কোরিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সারা কেয়ার্ন সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের হুমকি অনেক বেশি বিস্তৃত, যা কোম্পানিগুলো এখনো বুঝতে পারছে না।

তিনি ব্রিটিশ সংস্থাগুলোকে কর্মীদের ব্যাকগ্রাউন্ড ভালোভাবে যাচাই করার এবং ভিডিও অথবা সরাসরি ইন্টারভিউ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

এর মাধ্যমে আবেদনকারীর পরিচয় এবং তাদের দেওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হবে।

সারা কেয়ার্ন আরও জানান, কর্মীদের ঠিকানা ও বেতন পাঠানোর ক্ষেত্রে ভিন্নতা, যেমন— প্রচলিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে মানি এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের ব্যবহার, সন্দেহজনক হতে পারে।

এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে, ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে।

বিশেষভাবে, ইন্টারভিউয়ের সময় কর্মীদের ক্যামেরার সামনে আসতে বলা যেতে পারে অথবা সরাসরি অফিসে ডেকে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা যেতে পারে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের সংস্থাগুলোরও কর্মীদের পরিচয় যাচাই এবং অনলাইন নিয়োগের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

কারণ, এই ধরনের প্রতারণা যেকোনো স্থানেই ঘটতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *