ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আটকের ভয়ে দেশ ছাড়ছেন এক ব্রিটিশ-গাম্বিয়ান ছাত্র। এই খবরটি এখন আন্তর্জাতিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঐ ছাত্রের নাম মোমোডু তাল। তিনি করনেল ইউনিভার্সিটির পিএইচডি’র ছাত্র এবং একইসঙ্গে যুক্তরাজ্যের নাগরিক। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরই তার ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন অভিবাসন দপ্তর।
জানা গেছে, তালসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তাল আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে তাকে আটক করা হতে পারে।
এমনকি তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়েও তিনি শঙ্কিত। তিনি জানান, আদালতের কাছ থেকে তার অনুকূলে রায় পাওয়া গেলেও, যুক্তরাষ্ট্রে তার নিজের নিরাপত্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে কিনা, সে বিষয়ে তিনি সন্দিহান।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি বিক্ষোভকারীদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দিয়েছিল।
এমনকি তাদের হামাসের সমর্থক এবং ইহুদিবিদ্বেষী বলেও অভিযুক্ত করা হয়। যদিও বিক্ষোভকারীরা বরাবরই ইসরায়েলের সমালোচনা এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থনকে, হামাসের প্রতি সমর্থন হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন।
মোমোডু তাল-এর আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেলকে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল এবং তার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এর আগে, তাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের একটি ক্যারিয়ার ফেয়ার বন্ধ করে দিতেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন।
শুধু মোমোডু তাল-ই নন, এই পরিস্থিতিতে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীরও যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধেও হামাসকে সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ভারতীয় ছাত্র বাদর খান সুরিকেও আটক করা হয়েছিল। তবে আদালতের হস্তক্ষেপে সুরির বিতাড়ন আটকে যায়। এছাড়াও, আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিন-সংক্রান্ত বিষয়ে ভিন্নমত পোষণকারীদের কণ্ঠরোধ করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান