ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ইউরোপ সফর: আমেরিকার জন্য গভীর বার্তা!

ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ইউরোপ সফর: আমেরিকার আত্মার লড়াইয়ের সতর্কবার্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান সঙ্গীত শিল্পী ব্রুস স্প্রিংস্টিন বর্তমানে ইউরোপ সফরে রয়েছেন। কনসার্টে তিনি আমেরিকার গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে কথা বলছেন এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করছেন। তার এই সফরকালে দেওয়া বক্তব্যগুলো আমেরিকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্প্রিংস্টিন তার কনসার্টে প্রায়ই আমেরিকার গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার আদর্শের কথা উল্লেখ করেন। লিভারপুলের অ্যানফিল্ড স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শকের সামনে তিনি বলেন, “আমি যে আমেরিকাকে ভালোবাসি, সেই আমেরিকা গত ২৫০ বছর ধরে আশা ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে টিকে ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই দেশ এমন এক প্রশাসনের হাতে, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য এবং দেশদ্রোহী।”

পশ্চিমা বিশ্বে যখন ডানপন্থী রাজনীতির উত্থান ঘটছে, তখন স্প্রিংস্টিনের এই মন্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, শিল্পী হিসেবে স্প্রিংস্টিন তার কাজের মাধ্যমে আমেরিকান সমাজের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন।

তবে, অনেক দর্শক-শ্রোতা হয়তো তার রাজনৈতিক মন্তব্যের গভীরতা সেভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। কারণ, তারা হয়তো আমেরিকার রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত নন। তারপরও, স্প্রিংস্টিনের এই ধরনের মন্তব্য বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বে শিল্পী ও রাজনীতিবিদদের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, শিল্পীদের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া উচিত, আবার কারও মতে, তাদের এই ধরনের মন্তব্য এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

স্প্রিংস্টিন এমন এক সময়ে তার কথাগুলো বলছেন, যখন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ছে। যুক্তরাজ্যেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। দেশটির লেবার পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত লিভারপুলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি উপ-নির্বাচনে পপুলিস্ট দল “রিফর্ম পার্টি”-র ভালো ফল অনেককে চমকে দিয়েছে। এছাড়া, স্কটল্যান্ডে পপুলিস্ট ঢেউ এখনো না লাগলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি বদলাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়ই শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের উদারনৈতিক ধ্যান-ধারণার সমালোচনা করেন। তিনি স্প্রিংস্টিনসহ অন্যান্য শিল্পীদেরও কটাক্ষ করেছেন। তবে, স্প্রিংস্টিন দীর্ঘদিন ধরেই তার গানে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

বর্তমানে, অনেকে মনে করেন, ট্রাম্প এবং স্প্রিংস্টিন – উভয়েই সমাজের একই ধরনের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। যেমন – শিল্প-কারখানা কেন্দ্রিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়।

স্প্রিংস্টিনের “মাই হোমটাউন” গানটি ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে তিনি শ্রমিকশ্রেণীর দুর্দশার কথা বলেছিলেন। গানের সেই কথাগুলো আজও যেন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্প্রিংস্টিনের এই সফর এবং তার দেওয়া বক্তব্যগুলো আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *