ব্রুস স্প্রিংস্টিনের কনসার্ট: আমেরিকাকে ভালোবাসার এক গল্প!

ব্রুস স্প্রিংস্টিনের ইউরোপীয় সফরের প্রথম রাতের কনসার্টে যেন এক ভিন্ন আবহ তৈরি হয়েছিল। একদিকে ছিল তাঁর সঙ্গীতের মাদকতা, অন্যদিকে ছিল আমেরিকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রতি তাঁর স্পষ্ট বার্তা।

কনসার্টে তিনি বর্তমান মার্কিন প্রশাসনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য এবং দেশদ্রোহী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

কনসার্টটি ছিল একদিকে যেমন শোকের, তেমনই ছিল ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। ‘ল্যান্ড অফ হোপ অ্যান্ড ড্রিমস’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে তিনি শুরু করেন। গানটি যেন ক্ল্যারেন্স ক্লিমন্সের প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিল।

এরপর ‘ডেথ টু মাই হোমটাউন’-এর তীব্রতা বুঝিয়ে দেয়, কেন এই কনসার্ট শুধু গান শোনার চেয়েও বেশি কিছু ছিল।

স্প্রিংস্টিন তাঁর ব্যান্ড, ‘দ্য ই স্ট্রিট ব্যান্ড’-কে পরিচয় করিয়ে দেন, ‘এমন একটা দল যারা একসঙ্গে বুঁদ হয়ে যায়, ভালোবাসে এবং ইতিহাস তৈরি করে’। ব্যান্ডের পারফরম্যান্স ছিল ঝোড়ো হাওয়ার মতো।

‘ডার্কনেস অন দ্য এজ অফ টাউন’ গানের গভীরতা অথবা ‘দ্য প্রমিজড ল্যান্ড’-এর মর্মস্পর্শী উপস্থাপনাই হোক, প্রতিটি পরিবেশনাই ছিল অসাধারণ।

কনসার্টে আমেরিকার সেই সব স্বাধীনতা এবং সংস্কৃতির কথা বিশেষভাবে উঠে আসে, যা যেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ে যাচ্ছে।

তবে হতাশার মধ্যেও ছিল এক উজ্জ্বল দিক। ‘রেকং বল’ গানের মাধ্যমে তিনি কঠিন সময়েও ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র শুনিয়েছেন।

‘ব্যাডল্যান্ডস’, ‘থান্ডার রোড’, ‘বর্ন টু রান’ এবং ‘ড্যান্সিং ইন দ্য ডার্ক’-এর মতো জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশিত হওয়ার সময় দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে আনন্দের ঢেউ লাগে।

সবশেষে বব ডিলানের ‘টাইমস অফ ফ্রিডম’-এর পরিবেশনা যেন গভীর বার্তা দিয়ে যায়।

একদিকে যেমন দুঃখ ছিল, তেমনই ছিল ভালোবাসার জয়গান।

ব্রুস স্প্রিংস্টিনের মতো খুব কম শিল্পীই আছেন, যিনি এত সুন্দরভাবে আমেরিকার গভীর বেদনাকে গানের মধ্য দিয়ে তুলে ধরতে পারেন। তাঁর গান যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে, যেখানে আশা সবসময় বিদ্যমান থাকে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *