ইডাহোর চার শিক্ষার্থীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। অভিযুক্ত ব্রায়ান কোহবার্গার আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মৃত্যুদণ্ড এড়াতে সক্ষম হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইডাহো অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। অভিযুক্ত ব্রায়ান কোহবার্গার আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মৃত্যুদণ্ড এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (গতকাল) আদালতের শুনানিতে কোহবার্গারকে যখন বিচারক চারটি হত্যার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তিনি নির্বিকারভাবে ‘হ্যাঁ’সূচক জবাব দেন।
২০২২ সালের ১৩ই নভেম্বর, ইডাহোর মস্কোতে নিহত হন ইথান চ্যাপিন, কেইলি গনসালভেস, জিয়ানা কারনোডল ও ম্যাডিসন মোগেন নামের চার শিক্ষার্থী। কোহবার্গার ছিলেন ক্রিমিনাল জাস্টিস বিভাগের একজন প্রাক্তন পিএইচডি শিক্ষার্থী। শুরুতে তার বিরুদ্ধে প্রথম-ডিগ্রি হত্যা ও একটি চুরির অভিযোগ আনা হয়।
বোয়েসি শহরের আদালতে বিচারক স্টিভেন হিপলারের শুনানির সময় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, কোহবার্গারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে ডিএনএ, নজরদারির ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের ডেটা উপস্থাপন করা হয়েছে। এত শক্ত প্রমাণ থাকার পরও কেন এই আপোষ? অনেকের মনেই এখন এই প্রশ্ন।
এই মামলার শুনানিতে কৌঁসুলি জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রচুর অর্থ খরচ হতো। তাই বিচার বিভাগের অর্থ সাশ্রয়ের বিষয়টিও আপোষের একটি কারণ হতে পারে। তবে, এই আপোষের ফলে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কারো কারো মতে, এর মাধ্যমে দ্রুত বিচারের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এর ফলে ঘটনার বিস্তারিত অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। তারা জানতে চান, কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো, এর পেছনে আর কারো হাত ছিল কিনা, কিংবা খুনের অস্ত্রটি কোথায়?
আদালতে কোহবার্গারের পরিবারের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। তবে, তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে সবার কাছে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন। কোহবার্গারের আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিযুক্তের অটিজম রয়েছে। সম্ভবত, এই কারণেও তার মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করা হয়েছে।
আপাতদৃষ্টিতে, এই মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। সাধারণত, কোনো অভিযুক্তের বিচারের আগে সুষ্ঠু প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কোহবার্গারের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ আগামী ২৩শে জুলাই ধার্য করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা এই আপোষের বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। কেইলির বাবা স্টিভ গনসালভেস বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। তিনি জানতে চান, কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো, এর পেছনে আর কারো হাত ছিল কিনা, খুনের অস্ত্রটি কোথায় লুকানো হয়েছে।
অন্যদিকে, জিয়ানার বাবা জানিয়েছেন, তারা কখনোই পুরো সত্য জানতে পারবেন না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন