লাদাখের হেমিস মঠ: বৌদ্ধ উৎসবের এক ঝলক
সংবাদ সংস্থাগুলি সম্প্রতি ভারতের লাদাখে অনুষ্ঠিত হওয়া হেমিস উৎসবের ছবি প্রকাশ করেছে। এই উৎসবটি ‘হেমিস তসেচু’ নামেও পরিচিত।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ উৎসব যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবের ছবিগুলি লাদাখের সংস্কৃতি এবং এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার এক উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে।
হেমিস উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো মঠের প্রাঙ্গণে ভিক্ষুদের বিশেষ নৃত্য পরিবেশনা। এই নাচের সময় ভিক্ষুরা বিভিন্ন রঙের সিল্কের পোশাক এবং বিশেষ ধরনের টুপি পরিধান করেন।
তাঁদের পোশাকে সাদা রঙের মাথার খুলির প্রতিকৃতি দেখা যায়। এই নৃত্য মূলত অশুভ শক্তিকে দূর করে এবং স্থানটিকে পবিত্র করার উদ্দেশ্যে পরিবেশিত হয়।
এই নাচের সঙ্গে ড্রাম, সানাই এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলিত শব্দ এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
হেমিস মঠটি লাদাখের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এটি ১৬০০ শতকে নির্মিত হয় এবং এখানকার দ্রুকপা কাগ্যু সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত।
মঠটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।
এই উৎসবটি মূলত পালিত হয় ভারতীয় বৌদ্ধ গুরু পদ্মাসম্ভবের জন্মদিন উপলক্ষে। পদ্মাসম্ভবকে অষ্টম শতকে তিব্বতে বৌদ্ধধর্মের প্রসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
উৎসবটি প্রতি বছর তিব্বতি ক্যালেন্ডারের পঞ্চম মাসের দশম ও একাদশ দিনে অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ৫ ও ৬ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
উৎসবে স্থানীয়দের পাশাপাশি বহু পর্যটকদেরও আনাগোনা দেখা যায়। উৎসবের সময় মঠে বিশেষ প্রার্থনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া, এখানকার ঐতিহ্যবাহী ‘থাঙ্কা’ চিত্রকর্মও প্রদর্শিত হয়।
হেমিস উৎসব লাদাখের সংস্কৃতি এবং বৌদ্ধ ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই উৎসব সেখানকার মানুষের ধর্মীয় জীবন এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: