**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক স্নাতক ছাত্রের কীর্তি, পুত্রকে নিয়ে মঞ্চে আর পুলিশের ধাওয়া**
উচ্চশিক্ষা অর্জনের কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে, অবশেষে স্বপ্নের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জ্যাঁ পল আল আরব। একদিকে পড়াশোনা, অন্যদিকে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব—এই দুইয়ের মাঝে ভারসাম্য বজায় রেখে তিনি যেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
সম্প্রতি বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ে (University at Buffalo) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী থাকল সবাই।
অনুষ্ঠানে নিজের ছেলেকে সাথে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন আল আরব। ছোট ছেলেকে নীল টুপি ও গাউন পরিয়েছিলেন, যা ছিল তার বাবার পোশাকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
দৃশ্যটি ছিলো আবেগপূর্ণ, কিন্তু কর্তৃপক্ষের এতে আপত্তি ছিল। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, শুধুমাত্র গ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীরাই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে।
এই কারণে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা আল আরবকে থামাতে চেষ্টা করেন।
তবে উপস্থিত সকলে, বিশেষ করে অনুষ্ঠানে আসা অন্যান্য ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা, আল আরবের এই সাহসী পদক্ষেপকে সমর্থন করেন। চারিদিক থেকে উৎসাহ ও অভিনন্দনের জোয়ার বয়ে যায়।
পরবর্তীতে, তিনি তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই সম্মানসূচক সনদ গ্রহণ করেন। এরপর তিনি আকাশের দিকে ঘুষি উঁচিয়ে ধরেন, যা ছিল তার এক দারুণ মুহূর্তের বহিঃপ্রকাশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ তাকে অনুসরণ করছে, কিন্তু উপস্থিত জনতা তাকে সমর্থন জানাচ্ছে। আল আরব তার টিকটক ভিডিওতে ঘটনার বর্ণনা করে লেখেন, তিনি একই সাথে ফুলটাইম ছাত্র এবং দুটি চাকরি করেন।
দিনের বেলায় তিনি ছেলেকে দেখাশোনা করেন, যখন তার মা কাজে ব্যস্ত থাকেন। তিনি আরও জানান, গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে তিনি তার ছেলেকে সাথে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাতে রাজিও হয়েছিল।
তবে শেষ মুহূর্তে তারা তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে জানায়, আল আরব কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অনুষ্ঠানে তার সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন, যা নিয়মের লঙ্ঘন।
তবে তারা এও নিশ্চিত করেছে যে, এই ঘটনার জন্য আল আরবের কোনো প্রকার শাস্তি হবে না এবং তিনি তার ডিগ্রি পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ভবিষ্যতে তারা আশা করে, আল আরবের ছেলেও বাবার মতো একদিন একইভাবে মঞ্চে উঠবে, তবে সে সময় তার হাতেও থাকবে একটি স্নাতক ডিগ্রি।
এই ঘটনা একদিকে যেমন একজন বাবার তার সন্তানের প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত, তেমনই শিক্ষাঙ্গনে বিদ্যমান কিছু নিয়মের বিষয়েও নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল