৬ বছরের বালিকার নিমন্ত্রণ, বাস চালকের উত্তরে সবাই অবাক!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির বাসিন্দা ৬ বছর বয়সী ম্যালি কোর্টনি নামের এক শিশুর গল্প, যে তার স্কুলের বাসচালককে নিমন্ত্রণ করেছিল তার কিন্ডারগার্টেন গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে। ম্যালির এই আমন্ত্রণ যেন এক টুকরো ভালোবাসার গল্প, যা ছুঁয়ে গেছে সকলের হৃদয়।

স্কুলের বাসচালক ডন অ্যালেন, যিনি ম্যালির প্রতিদিনের পথচলার সঙ্গী, সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন এই আমন্ত্রণ।

ম্যালি আর ডনের মধ্যে সম্পর্কটা ছিল অন্যরকম। প্রতিদিন সকালে, স্কুলে যাওয়ার আগে আর স্কুল ছুটির পর, তাদের দেখা হতো। আলিঙ্গন ছিল তাদের দিনের শুরু এবং শেষের অপরিহার্য অংশ।

ম্যালির মা, অলিভিয়া যখন মেয়ের গ্র্যাজুয়েশন পার্টির পরিকল্পনা করছিলেন, তখন ম্যালির মনে একটাই নাম ছিল – মি. ডন। নিমন্ত্রণপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডন জানিয়েছিলেন, তিনি অবশ্যই আসবেন।

অনুষ্ঠানের দিন, ম্যালির কাকিমা, হলি ব্র্যাচার, আলাবামা থেকে এসেছিলেন এই বিশেষ দিনে যোগ দিতে। পার্টিতে এসে তিনি এক অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে ম্যালিকে হাসিখুশি গল্প করতে দেখেন। কৌতূহল নিয়ে তিনি অলিভিয়াকে জিজ্ঞাসা করেন, “ঐ লোকটি কে?”

অলিভিয়া উত্তর দেন, “ও আমাদের ম্যালির বাসচালক, আর ম্যালি ওকে খুব ভালোবাসে। ম্যালিই ওকে নিমন্ত্রণ করেছে।

তাদের এই আন্তরিক সম্পর্ক দেখে হলি মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি তাদের একসঙ্গে খেলাধুলা, হাসি-ঠাট্টা করতে দেখেন, যা ক্যামেরাবন্দী করার মতো ছিল।

পরে হলি সেই ভিডিও টিকটকে আপলোড করেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই ভিডিওটি প্রায় ৫ মিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করে এবং ৪ হাজারের বেশি মন্তব্য জমা হয়।

ভিডিওর নিচে আসা মন্তব্যগুলো যেন আরও একটি সুন্দর দিক উন্মোচন করে। অনেকেই তাদের শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের কথা লিখেছেন, যাদের অবদান তাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। কেউ লিখেছেন, তাদের দশম শ্রেণির শিক্ষক বৃদ্ধ বয়সেও মায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় এসেছিলেন, যা তারা আজও ভুলতে পারেননি।

ম্যালির কথায়, “আমি খুব খুশি হয়েছিলাম যে মি. ডন সত্যি এসেছিল! আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরি, আমরা একসঙ্গে খেয়েছি, খেলা করেছি। আমি আমার কাপকেকটাও তাকে দিয়েছিলাম, কারণ আমি সেটা খেতে চাইনি।” ডন তাকে বলেছিলেন, “আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত এবং সোমবার সকালে আবার দেখা হবে।”

ম্যালির কাছে এই গ্র্যাজুয়েশন পার্টির সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ছিল, “যখন আমি আমার গ্র্যাজুয়েশনের উপহারগুলো খুলেছিলাম!”

এই ঘটনা আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি। যেখানে শিশুদের প্রতি সামান্য যত্ন এবং ভালোবাসা, তাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *