ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে নতুন চমক! সুরক্ষিত হলো সমুদ্র, রক্ষা পাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি!

শিরোনাম: ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে নতুন সামুদ্রিক অভয়ারণ্য: আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও সমুদ্রজীবনের সুরক্ষা।

বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব বাড়ছে, তেমনই ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল অঞ্চলে গড়ে উঠেছে এক নতুন সামুদ্রিক অভয়ারণ্য। এই অঞ্চলের আদিবাসী চ্যুম্যাশ সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে ‘চুম্যাশ হেরিটেজ ন্যাশনাল মেরিন স্যাংচুয়ারি’ (Chumash Heritage National Marine Sanctuary)।

প্রায় ৪,৫০০ বর্গমাইল বিস্তৃত এই অভয়ারণ্যটি শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলের একটি অংশ নয়, বরং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল কোস্ট, যা সান লুইস ওবিসপো থেকে সান্তা বার্বারার গ্যাভিওটা উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত, সেখানেই এই অভয়ারণ্যটি তৈরি করা হয়েছে।

এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সামুদ্রিক অভয়ারণ্য, যা আদিবাসী সম্প্রদায়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হল সমুদ্রের বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল রক্ষা করা, যার মধ্যে রয়েছে সি-ওটার (sea otter), নীল তিমি, কালো অ্যাbalone, এবং বিভিন্ন ধরনের হাঙর প্রজাতি।

এই প্রকল্পের সূত্রপাত হয় ২০১৫ সালে, যখন নর্দার্ন চ্যুম্যাশ ট্রাইবাল কাউন্সিলের প্রধান ফ্রেড কলিন্স এই ধারণাটি প্রথম উত্থাপন করেন।

তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর কন্যা ভায়োলেট সেজ ওয়াকার এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি এগিয়ে নিয়ে যান।

ওয়াকার মনে করেন, “আমাদের বাবা বিশ্বাস করতেন যে, আমাদের মাটির প্রতি, জীবজন্তুদের প্রতি এবং একে অপরের প্রতি আরও যত্নবান হতে হবে। তাঁর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়াটা আমার জন্য সম্মানের।”

এই অভয়ারণ্যের মাধ্যমে শুধু সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যই রক্ষা করা হবে না, বরং চ্যুম্যাশ সম্প্রদায়ের পবিত্র স্থানগুলোকেও সংরক্ষণ করা হবে।

এর মধ্যে রয়েছে তাঁদের সমাধিস্থল, ধর্মীয় স্থান, এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্ব সম্পন্ন এলাকাগুলো। খুব শীঘ্রই এই অভয়ারণ্য ঘুরে দেখবার জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বে ট্যুর শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পর্যটকেরা এখানে তিমি দেখা বা কায়াকিং-এর মতো সমুদ্র-ভ্রমণের সুযোগও পাবেন।

পর্যটকদের জন্য চ্যুম্যাশ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার একটি চমৎকার জায়গা হল ‘সান্তা ইনেজ চ্যুম্যাশ মিউজিয়াম অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার’।

এখানে চ্যুম্যাশ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রা, বাস্কেট তৈরি, কাঠের তৈরি নৌকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়।

মিউজিয়ামটি এমন একটি স্থানে অবস্থিত, যেখান থেকে পয়েন্ট কনসেপশন দেখা যায়, যা চ্যুম্যাশদের কাছে ‘হুমকাক’ নামে পরিচিত এবং তাঁদের পূর্বপুরুষদের আত্মিক জগতে প্রবেশের স্থান হিসেবে বিবেচিত।

এই অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠার ফলে একদিকে যেমন সমুদ্রের পরিবেশ সুরক্ষিত হবে, তেমনই আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও বিশেষভাবে সম্মানিত হবে।

এটি পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার এক অনন্য উদাহরণ।

তথ্য সূত্র: ট্র্যাভেল + লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *