যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি ক্যানাবিস ফার্মে অভিবাসন কর্মকর্তাদের অভিযানে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ৫7 বছর বয়সী এই ব্যক্তির নাম জেইমি আলানিস।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি, এবং মেক্সিকোতে স্ত্রী ও কন্যার কাছে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর ভাতিজি।
খবর অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যামারিলো এবং কার্পেন্টারিয়া এলাকার ‘গ্লাস হাউস ফার্মস’-এ অভিযান চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (Department of Homeland Security – DHS) অধীনে থাকা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)। এই অভিযানে প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের অবৈধভাবে বসবাসের সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে আলানিস ছিলেন না, তবে কর্মকর্তাদের ধাওয়া করার সময় তিনি সম্ভবত পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান।
ডিএইচএস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার সময় আলানিসকে আটকের চেষ্টা করা হয়নি। তবে তিনি কিভাবে ছাদে উঠেছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়।
আলানিসের মৃত্যুর ঘটনা অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইউনাইটেড ফার্ম ওয়ার্কার্স (UFW) এক বিবৃতিতে এই অভিযানকে ‘সহিংস ও নিষ্ঠুর’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
তারা বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপ আমেরিকান সমাজে ভীতি তৈরি করে, খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটায় এবং পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে। যদিও ইউএফডব্লিউ সরাসরি ওই ফার্মের শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করে না, তবুও তারা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এদিকে, এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজন মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও, ফেডারেল এজেন্টদের ওপর গুলি চালানোর সন্দেহে জড়িত ব্যক্তির সন্ধান দিতে পারলে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
গ্লাস হাউস ফার্মস কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের কাছে বৈধ ওয়ারেন্ট ছিল এবং তারা কর্মীদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে। তারা আরও জানায়, শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেনি এবং কখনো নাবালক শ্রমিক নিয়োগ করেনি।
ফার্মটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা গ্রাহাম ফেরার এবং কাইল কাজান। রাজনৈতিকভাবে ফেরার ডেমোক্রেটদের এবং কাজান ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলকেই অনুদান দেন।
এই ঘটনার পর, ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের আত্মীয়দের বিষয়ে তথ্য জানতে এবং অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন