ক্যালিফোর্নিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির উত্থান, যিনি রাজ্যের নতুন নির্বাচনী মানচিত্র তৈরির পরিকল্পনাকে রুখে দিতে লড়ছেন। এই ব্যক্তি হলেন চার্লস মুঙ্গার জুনিয়র, যিনি একজন ধনী উত্তরাধিকারী এবং রাজ্যের স্বাধীনভাবে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের একজন জোরালো সমর্থক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার মতো রাজ্যে, নির্বাচনী এলাকার সীমানাগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সুবিধা হয়, একে ‘গেরিম্যান্ডারিং’ বলা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম চাচ্ছেন এই ধরনের কারসাজি বন্ধ করতে। তিনি প্রস্তাবনা ৫০-এর মাধ্যমে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন, যার মূল উদ্দেশ্য হলো রাজ্যের কংগ্রেসের আসনগুলোর মানচিত্র পরিবর্তনে তার দলের স্বাধীনতা আনা। নিউসমের যুক্তি হলো, টেক্সাস ও অন্যান্য রাজ্যে রিপাবলিকানরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইচ্ছানুসারে তাদের কংগ্রেসের মানচিত্র পরিবর্তন করেছেন, তাই তাদের রুখতে এই পদক্ষেপ জরুরি।
তবে, মুঙ্গার মনে করেন, প্রস্তাবনা ৫০ স্বাধীনভাবে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের প্রক্রিয়াকে দুর্বল করবে। তিনি এর তীব্র বিরোধিতা করছেন এবং এর বিরুদ্ধে জনমত গঠনে কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন। মুঙ্গারের মতে, এই পদক্ষেপ আসলে রাজনৈতিক কারচুপির একটি কৌশল, যা দীর্ঘমেয়াদে রাজ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।
চার্লস মুঙ্গার জুনিয়র, ওয়ারেন বাফেটের সহযোগী চার্লস টি. মুঙ্গারের ছেলে, যিনি নিজেও একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার রাজনীতিতে একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যদিও তিনি সাধারণত প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকেন, তবে বিতর্কিত বিষয়গুলোতে তার জোরালো অবস্থান প্রায়ই দেখা যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মুঙ্গারের এই পদক্ষেপের পেছনে মূল কারণ হলো, তিনি মনে করেন, নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা উচিত। তিনি মনে করেন, এটি গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। তিনি অতীতেও বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এবং তার সেই আগ্রহ এখনো বিদ্যমান।
তবে, প্রস্তাবনা ৫০-এর বিরোধিতায় মুঙ্গারের এই লড়াই একা হয়ে যাচ্ছে। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়ার প্রভাবশালী অনেক সংগঠন এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে তাদের সমর্থন জানায়নি। কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, মুঙ্গারের এই পদক্ষেপ রিপাবলিকানদের সুবিধা এনে দিতে পারে। যদিও মুঙ্গার ও তার সমর্থকেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের মতে, এটি রাজ্যের জনগণের অধিকার রক্ষার একটি লড়াই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্কের ফলস্বরূপ ক্যালিফোর্নিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। প্রস্তাবনা ৫০-এর ভাগ্য নির্ধারণ করবে রাজ্যের আগামী দিনের রাজনৈতিক গতিপথ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন