ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মুখোমুখি ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান শিবির।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম রাজ্যের কংগ্রেসনাল নির্বাচনী এলাকার সীমানা নতুন করে আঁকতে চাইছেন। টেক্সাসে রিপাবলিকানদের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। তবে তার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন পক্ষ।
এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার, যিনি দীর্ঘদিন ধরে অরাজনৈতিক সীমানা পুনর্নির্ধারণের পক্ষে কথা বলেছেন। এছাড়াও রয়েছেন প্রয়াত বিলিয়নেয়ার চার্লস মুঙ্গার জুনিয়রের ছেলে, বিভিন্ন রিপাবলিকান নেতা এবং ‘লিগ অফ উইমেন ভোটার্স’-এর মতো সংগঠন।
গভর্নর নিউসামের যুক্তি, টেক্সাসের রিপাবলিকানরা যদি তাদের অঙ্গরাজ্যে এমন পদক্ষেপ নেয়, তবে ক্যালিফোর্নিয়ারও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। টেক্সাসে রিপাবলিকানরা নতুন করে নির্বাচনী এলাকার সীমানা তৈরি করে তাদের দল সমর্থিত আরো পাঁচটি আসন বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
তবে টেক্সাসের মতো এত সহজে কাজটা হচ্ছে না ক্যালিফোর্নিয়ায়। এখানে নতুন মানচিত্র তৈরি করতে হলে নভেম্বরের গণভোটে জনগণের সমর্থন লাগবে, যা বেশ কঠিন। এই গণভোটের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন আদায়ে ডেমোক্রেটদের লড়তে হবে।
গভর্নর নিউসাম মনে করেন, ভোটাররা তার পক্ষেই রায় দেবেন। তিনি বলেছেন, “আমরা আগুনের বিরুদ্ধে আগুন ব্যবহার করব।”
তবে অনেকেই মনে করছেন, এই গণভোটে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে, যা ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিরোধীরা বলছেন, তাদের সমর্থন ব্যাপক, এমনকি ডেমোক্রেট ভোটাররাও তাদের সঙ্গে রয়েছেন।
২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার ৬০ শতাংশের বেশি ভোটার একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, যার মাধ্যমে রাজ্যের আইনসভা থেকে কংগ্রেসনাল মানচিত্র তৈরির ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। চার্লস মুঙ্গার জুনিয়র এই প্রস্তাব পাসের জন্য ১ কোটি ২৪ লক্ষ মার্কিন ডলার খরচ করেছিলেন।
তিনি বলেছেন, তিনি এই সংস্কারগুলো রক্ষা করতে দৃঢ়ভাবে লড়বেন।
তবে এরই মধ্যে এই ইস্যুতে এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্রকে হারাতে বসেছেন নিউসাম। ‘কমন কজ’ নামের একটি সংগঠন, যারা সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংস্কারের পক্ষে, তারা জানিয়েছে, কিছু শর্ত পূরণ হলে তারা মধ্যবর্তী সময়ে সীমানা পরিবর্তনের বিরোধিতা করবে না।
তাদের মতে, ক্যালিফোর্নিয়ার পরিকল্পনা এখনো তাদের ছয়টি ‘ন্যায্যতার মানদণ্ড’ পূরণ করতে পারেনি।
অন্যদিকে, ‘লিগ অফ উইমেন ভোটার্স’ গভর্নরের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে। তারা মনে করে, অস্থায়ীভাবে বর্তমান মানচিত্র পরিবর্তন করা হলে তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করবে।
রিপাবলিকানরা মনে করছেন, এই ইস্যুতে তারা সুবিধা পেতে পারেন। তাদের মতে, ডেমোক্রেটদের এই পদক্ষেপ ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে।
সাবেক গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারও এই বিতর্কে ফিরে এসেছেন। তিনি এই ইস্যুতে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
রিপাবলিকান দলের ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি কেভিন কাইলিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। তিনি মনে করেন, মহামারীর কারণে রাজ্যের জনসংখ্যার সঠিক হিসাব নেই, তাই নতুন মানচিত্র তৈরি করা উচিত নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্কের মূল বিষয় হলো নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও জনগণের অধিকার।
তথ্য সূত্র: সিএনএন