যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্বাচনী এলাকার সীমানা পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। এই পদক্ষেপের ফলে ২০২৬ সালের নির্বাচনে মার্কিন কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উভয় রাজ্যের এই তৎপরতা কার্যত একটি রাজনৈতিক ‘যুদ্ধ’-এর সূচনা করেছে, যা অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা, যা কংগ্রেস নামে পরিচিত, তার নিম্নকক্ষ হলো প্রতিনিধি পরিষদ। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা যে দলের হাতে থাকে, তারা বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বর্তমানে, রিপাবলিকান পার্টি সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। তবে, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
টেক্সাসে, রিপাবলিকানরা নতুন করে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন, যা তাদের দলের জন্য আরও আসন নিশ্চিত করতে পারে। এর প্রতিক্রিয়ায়, ডেমোক্র্যাটরা রাজ্যসভা থেকে বেরিয়ে যান এবং এর ফলে একটি অচলাবস্থা তৈরি হয়।
যদিও ডেমোক্র্যাটরা জানিয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়া যদি তাদের নতুন প্রস্তাবিত মানচিত্র প্রকাশ করে এবং টেক্সাসের রিপাবলিকানরা বিশেষ অধিবেশন শেষ করে, তবে তারা আবার আলোচনায় বসতে রাজি। তবে, টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এই বিষয়ে নতুন করে বিশেষ অধিবেশন ডাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটরাও তাদের রাজ্যের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছেন। তাদের লক্ষ্য হলো, নতুন সীমানা তৈরি করে প্রতিনিধি পরিষদে আরও আসন নিশ্চিত করা।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম একটি বিশেষ নির্বাচনের ঘোষণা করেছেন, যেখানে নতুন প্রস্তাবিত মানচিত্রের অনুমোদন চাওয়া হবে। ডেমোক্র্যাটরা মনে করেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে টেক্সাসে রিপাবলিকানদের সম্ভাব্য সুবিধা হ্রাস করা সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাহায্য প্রদানের মতো বিষয়গুলোতে পরিবর্তন আসতে পারে।
ক্যালিফোর্নিয়ার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তারা মনে করেন, এটি ডেমোক্র্যাটদের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর একটি কৌশল।
সাবেক ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ২০২৬ সালের নির্বাচনের দিকে আরও গভীর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথকেও প্রভাবিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।