কম্বোডিয়ার পর্যটন খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে দেশটির রাজধানী নম পেনের কাছে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিক তেচো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। গত অক্টোবরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিমানবন্দরের উদ্বোধন করা হয়, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত।
আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন এই বিমানবন্দরটি শুধু যাত্রী পরিবহনের কেন্দ্র হিসেবেই নয়, বরং কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি হিসেবেও বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। বিমানবন্দরের বিশাল প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে একটি বিশাল বুদ্ধ মূর্তি, যা আগত যাত্রীদের স্বাগত জানায়। বিমানবন্দরের ডিজাইনও করা হয়েছে আকর্ষণীয় করে, যা দর্শকদের মন জয় করবে।
কম্বোডিয়া সরকার মনে করছে, এই বিমানবন্দরটি চালু হওয়ার ফলে পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। বর্তমানে দেশটি বছরে প্রায় ২৫ লক্ষ আন্তর্জাতিক পর্যটকের আগমন দেখে, যেখানে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে এই সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ এবং ভিয়েতনামে ১ কোটি ৮০ লক্ষ। তেচো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশটির পর্যটন শিল্পকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরটি তৈরিতে চীনের বিনিয়োগ রয়েছে, যা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। তবে, বিমানবন্দরের নির্মাণ এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। নিরাপত্তা এবং পর্যটকদের জন্য উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করা এক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বিষয়।
পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু আধুনিক বিমানবন্দর থাকলেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কম্বোডিয়া সরকার বর্তমানে তাদের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিমানবন্দরটি চালু হওয়ার ফলে ব্যাংকক, বেইজিং, হ্যানয়, সিঙ্গাপুর এবং কুয়ালালামপুরের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটকদের জন্য কম্বোডিয়ায় ভ্রমণ সহজ করবে।
তেচো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধনের মাধ্যমে কম্বোডিয়া সরকার তাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে দেশটি কতটুকু সফল হয় এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের পরিচিতি কতটুকু বাড়াতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন