আতঙ্ক! ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস, বাড়ছে গ্রেপ্তারি?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের বিক্ষোভের আকার ছোট হলেও এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি গুরুতর। বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা মূলত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। তারা চাইছে, যেসব কোম্পানি ইসরায়েলকে অস্ত্র বা অন্য কোনো সহায়তা করে, তাদের সঙ্গে যেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্ক না রাখে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের লাইব্রেরি দখল করে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ বন্ধের দাবি জানায়। একইসঙ্গে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়েও বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। উল্লেখ্য, বোয়িং ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির ওপর নজর রাখছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে এবং এর জেরে ফেডারেল অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রতিবাদ জানানোর ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম তৈরি করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও পরিস্থিতি মোকাবিলায় কঠোর হচ্ছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভের জেরে ৬৫ জন শিক্ষার্থীকে বরখাস্ত করেছে এবং আরও ৩৩ জনকে ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়েও ২১ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ফেডারেল অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ারও সম্ভবনা রয়েছে। এমনকি ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিতাড়িত করারও পদক্ষেপ নিতে পারে সরকার।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও সমাজবিদ্যার অধ্যাপক রবার্ট কোহেন বলছেন, বিক্ষোভের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে যখন ফিলিস্তিনিরা খাদ্য সংকটে ভুগছে, তখন বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদ জানানোর জন্য এই সময়কে বেছে নিয়েছে।

তবে, অনেক শিক্ষার্থী শাস্তির ভয়ে আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিতে চাইছে না।

এবারের বিক্ষোভের পেছনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও কাজ করছে। ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে তারা বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হয়।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ফেডারেল অনুদান পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *