কানাডার নির্বাচনে জয়ী হলেন মার্ক কার্নি: ট্রাম্পের হুমকিকে হার মানিয়ে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় লিবারেল পার্টি। কানাডায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি জয়লাভ করেছে।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নজিরবিহীন কিছু পদক্ষেপের কারণে সৃষ্ট প্রতিকূলতাকে জয় করে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। নির্বাচনে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এবং কানাডা দখলের হুমকির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
নির্বাচনে জয়লাভের পর কার্নি বলেন, তাঁরা ট্রাম্পের মোকাবিলায় দৃঢ় পদক্ষেপ নেবেন। তিনি জানান, সংকট মোকাবিলায় তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং প্রয়োজনে পাল্টা শুল্ক আরোপের মাধ্যমে কানাডার শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়া হবে।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর অটোয়াতে এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে কার্নি বলেন, তাঁরা একটি শক্তিশালী জাতি গঠন করেছেন, যা কিছু ক্ষেত্রে প্রতিকূল প্রতিবেশীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।
কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের ৩৪৩টি আসনের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সরকার গঠনের জন্য একটি দলকে ১৭২টি আসনে জয়ী হতে হয়।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে লিবারেল পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার গঠন করতে তাদের অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হতে পারে।
নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পয়েলভরের পরাজয় হয়েছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর তিনি কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কনজারভেটিভরা দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এবং শুল্কমুক্ত নতুন বাণিজ্য চুক্তির জন্য লিবারেল পার্টির সঙ্গে কাজ করবে।
নির্বাচনে ট্রাম্পের নেওয়া কিছু পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। ট্রাম্প কানাডার পণ্য ও জ্বালানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন এবং দেশটি দখলেরও হুমকি দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের কারণে ভোটারদের মধ্যে লিবারেল পার্টির প্রতি সমর্থন বাড়ে।
নির্বাচনে খাদ্য ও আবাসনের মূল্যবৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভোটাররা সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন।
যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ২.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, তবে ২০২০ সালের তুলনায় জিনিসপত্রের দাম এখনো অনেক বেশি।
অন্যদিকে, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-র নেতা জগমিত সিং নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারেননি। তিনি পরাজয় স্বীকার করে দল থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনে ট্রাম্পের হুমকি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি প্রধান বিষয় ছিল। তাঁরা মনে করেন, কার্নি ট্রাম্পের মোকাবিলা করতে এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সক্ষম হবেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা