কানাডার অর্থনীতিতে অশনি সংকেত! বেকারত্বের হারে বড় উল্লম্ফন

কানাডার শ্রমবাজারে অস্থিরতা, বাড়ছে বেকারত্ব: মার্কিন শুল্কের প্রভাব।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির কারণে কানাডার অর্থনীতিতে দেখা যাচ্ছে অস্থিরতা। দেশটির শ্রমবাজারের সর্বশেষ পরিস্থিতি বলছে, এপ্রিল মাসে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৯ শতাংশে, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এর আগে, নভেম্বরেও একই হারে বেকারত্ব ছিল, যা ছিল মহামারী-পূর্ববর্তী সময়ের আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত শুল্ক এই পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

কানাডার প্রধান রপ্তানি খাতগুলোর একটি, উৎপাদন শিল্পে এর গুরুতর প্রভাব পড়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে শুধু এই শিল্পেই ৩১,০০০ মানুষের কাজ চলে গেছে।

এছাড়া, পাইকারি, খুচরা এবং বাণিজ্য খাতেও প্রায় ২৭,০০০ কর্মী চাকরি হারিয়েছেন।

তবে, সরকারি খাতে কর্মসংস্থান কিছুটা বেড়েছে। ফেডারেল নির্বাচনের কারণে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ফলে এপ্রিল মাসে সরকারি খাতে ২৩,০০০ নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে।

যদিও এটি সামগ্রিক পরিস্থিতির তুলনায় সামান্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন শুল্কের কারণে কানাডার অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কা রয়েছে।

কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক (Bank of Canada) পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।

ব্যাংকটি জানিয়েছে, রপ্তানি কমে যাওয়া, মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো বিষয়গুলো তাদের উদ্বেগের কারণ।

এদিকে, স্থায়ী কর্মীদের গড় ঘণ্টা প্রতি মজুরি এপ্রিল মাসে ৩.৫ শতাংশে স্থিতিশীল ছিল, যা মার্চ মাসের সমান। বিশ্লেষকদের মতে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মজুরি বৃদ্ধির হার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এপ্রিল মাসে কর্মসংস্থান বাড়লেও তা ছিল খুবই সামান্য। মাসটিতে মাত্র ৭,৪০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য বেশি।

আগের মাসে, অর্থাৎ মার্চে, ৩২,৬০০ চাকরি কমেছিল।

কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় কর্মসংস্থান হারও কমেছে। এপ্রিল মাসে কর্মসংস্থান হার ছিল ৬০.৮ শতাংশ, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বেকারত্ব বাড়ায় উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, কারণ গত বছরের এপ্রিল মাসে যারা বেকার ছিলেন, তাদের মধ্যে ৬১ শতাংশ এখনো কাজ খুঁজছেন।

এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪ শতাংশ বেশি।

কানাডার অর্থনীতিবিদ আলী জাফরি এক সাক্ষাৎকারে রয়টার্সকে বলেন, “আমরা দেখছি, বাণিজ্য যুদ্ধের আগে থেকেই কানাডার শ্রমবাজার দুর্বল ছিল, যা এখন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

আজকের এই প্রতিবেদন ব্যাংক অব কানাডার জন্য জুন মাসে সুদের হার কমানোর একটি যুক্তি তৈরি করছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *